
ইরানে মার্কিন হামলার একদিন পর দেশটিতে সরকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার (২২ জুন) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার দিকে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “সরকার পরিবর্তন শব্দটি রাজনৈতিকভাবে সঠিক না হলেও, যদি ইরানের বর্তমান সরকার দেশটিকে আবার মহান করতে না পারে, তাহলে সেখানে সরকার পরিবর্তন হবে না কেন?”
বিবিসির খবরে বলা হয়, ট্রাম্পের এই মন্তব্য মার্কিন প্রশাসনের ভেতরেও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এর আগে একই দিন সকালে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিটে হেগসেথ বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অভিযান সরকার পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে নয়। আমাদের লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির অবসান।”
তবে ট্রাম্পের বক্তব্যে ইরানে সরকার পরিবর্তনের বিষয়টি যেন নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে। এর ফলে এই হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
বিশ্লেষকদের মতে, রিপাবলিকান দলেই সরকার পরিবর্তন ও মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ নিয়ে রয়েছে বিভক্তি। আগের প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ যখন ইরাকে মানব বিধ্বংসী অস্ত্রের অভিযোগ তুলে সরকার পরিবর্তনের নীতি গ্রহণ করেছিলেন, পরে সেই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয় এবং ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। ট্রাম্প সেই বুশ-বিরোধী অবস্থান থেকেই রাজনৈতিক সমর্থন আদায় করেছিলেন। অথচ এবার নিজেই ইরান নিয়ে একই কৌশলে ফিরছেন বলেই অনেকের মত।
অন্যদিকে, হরমুজ প্রণালী ঘিরে চলমান উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা ইরানকে প্রণালী বন্ধ থেকে বিরত রাখতে চাপ প্রয়োগ করে। একই সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বিশ্বজুড়ে মার্কিন নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে।
সব মিলিয়ে ইরানে মার্কিন হামলার কৌশল এখন আর কেবল পররাষ্ট্রনীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই; বরং এটি ট্রাম্প প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর