
ইরানের ছয়টি সামরিক বিমানবন্দরে বিমান হামলা চালানোর দাবি করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। হামলায় ইরানের অন্তত ১৫টি যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ইসরায়েলের হিব্রু ভাষার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই দাবি করা হয়।
দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের সাহায্যে চালানো এই হামলায় মেহরাবাদ, মাশহাদ, দেজফুল, ইসফাহান, তাবরিজ এবং নাতানজ বিমানবন্দর লক্ষ্যবস্তু করা হয়। হামলায় রানওয়ে, ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার, জ্বালানিবাহী বিমান এবং ইরানি বাহিনীর ব্যবহৃত এফ-১৪, এফ-৫ এবং এএইচ-১ ধরনের যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, এই অভিযানের মাধ্যমে ইরানি বিমান প্রতিরক্ষা ও পাল্টা হামলার সক্ষমতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত করা হয়েছে।
‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে পরিচালিত এই অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েল মূলত ইরানের অভ্যন্তরে থাকা কৌশলগত বিমানঘাঁটি ও সামরিক বিমান চলাচলের কেন্দ্রে আঘাত হানে। হামলার আগে ইরানের অভ্যন্তরে গোপনে ড্রোন ও গোয়েন্দা নজরদারি চালানো হয় বলে ইসরায়েলি সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
হামলার পর ইরানের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ইরানি সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, হামলায় বহু সামরিক কর্মী হতাহত হয়েছেন এবং কিছু বেসামরিক স্থাপনাও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় পৃথক মার্কিন হামলার কথা স্বীকার করে বলেছেন, “ইতিহাস বদলে গেছে।” আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই হামলার ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। রাশিয়া, চীন, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেক দেশ ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের এমন সামরিক পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়ে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে।
হামলার পরপরই মধ্যপ্রাচ্যের আকাশপথে বেশ কিছু দেশ তাদের বিমান চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে। এতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বিঘ্নিত হয়েছে এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের সামরিক স্থাপনায় এই আক্রমণ সরাসরি যুদ্ধের দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে বড় ধরনের সংঘাতের শঙ্কা বাড়ছে। পরিস্থিতির পরবর্তী গতি নির্ভর করছে ইরানের সম্ভাব্য জবাবি পদক্ষেপের ওপর।
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর