
আপিল অ্যান্ড আরবিট্রেশন বোর্ডে বিচারাধীন মামলা উপেক্ষা করে জামালপুরের সরিষাবাড়ী সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুর্নীতির দায়ে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদা পারভীনকে পুনর্বহাল করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য বিকাশ চন্দ্র সাহা লিটন, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদা পারভীন এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান সামাদ রবিবার (২২ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদা পারভীনকে পুনর্বহাল করায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযোগকারী সাবেক শিক্ষক ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) মোস্তাফিজুর রহমান ও শিক্ষার্থীরা গত ২৮ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যাংক রশিদের মাধ্যমে আদায়কৃত অর্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা না দিয়ে ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে জমা করে আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে এবং শিক্ষকরা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে ইউএনও’র কাছে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদা পারভীনের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। ওয়াজেদা পারভীনের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ৪ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরবর্তীতে ২ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুণ কৃষ্ণ পাল তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করে ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের আপিল অ্যান্ড আরবিট্রেশন বোর্ডে একটি মামলা দায়ের করেন।
সরিষাবাড়ী সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবগঠিত অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান সামাদ গত ১৫ জুন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। একই দিনে ম্যানেজিং কমিটির সভায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদা পারভীনকে পুনর্বহাল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষককে পুনর্বহাল করার বিষয়টি তাকে অবগত করা হয়নি। তিনি বিষয়টি জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ময়মনসিংহের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. শহিদুল্লাহ জানান, প্রধান শিক্ষকের চূড়ান্ত বরখাস্তকরণ বিষয়ে আপিল বোর্ডে বিচারাধীন রয়েছে। তাকে পুনর্বহাল করার বিষয়টি জেনে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর