
বরগুনা জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। উপকূলীয় এই জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, যা স্বাস্থ্য বিভাগকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। চিকিৎসক সংকট, অপর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে শয্যা সংকট প্রকট। বহু রোগীকে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। নারী, শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ডেও একই অবস্থা। অনেক রোগীকে বারান্দা ও করিডোরে রাখা হয়েছে, যা রোগীদের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে।
বরগুনার সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু বরগুনা হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৮০ জন। জেলার অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি আছেন আরও ১৩ জন। এর মধ্যে আমতলীতে ১ জন, বেতাগীতে ২ জন, বামনায় ৬ জন এবং পাথরঘাটায় ৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ২৪২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত বরগুনায় ২ হাজার ৪৯৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২ হাজার ২৫৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আক্রান্তদের অধিকাংশই বরগুনা পৌর শহর ও সদর উপজেলার বাসিন্দা। বরগুনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ জন এবং অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ জনসহ এ পর্যন্ত মোট ২২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রেজোয়ানুর আলম জানান, রোগীর চাপ সামাল দিতে তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণ দ্রুত সরবরাহ করা না গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় সর্বোচ্চ ৯৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি স্থানীয়দের সচেতন হওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক পরিসরে পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার ওপর জোর দিয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বরগুনা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৮ জন চিকিৎসক ও ১০ জন নার্স পদায়ন করা হয়েছে। এছাড়া স্যালাইন ও রক্ত পরীক্ষার কিট সংকটের বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর