
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তাদের পূর্ণ কর্মবিরতি প্রত্যাহারের পর স্বাভাবিক হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর ও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপোগুলোর (আইসিডি) কার্যক্রম।
সোমবার সকাল থেকে কাস্টম হাউজে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়েছে। কাস্টমস কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সিএন্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্টদেরও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে দেখা গেছে।
কর্মকর্তারা জানান, রোববার সন্ধ্যায় কর্মসূচি প্রত্যাহারের পরপরই কাস্টমসের কার্যক্রম শুরু হয়। বিল অব এন্ট্রি, বিল অব এক্সপোর্ট এবং শুল্কায়ন কার্যক্রম শুরু হওয়ায় বেসরকারি অফডকগুলোতে তৈরি হওয়া অচলাবস্থা দূর হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুদিনে আটকা পড়া প্রায় ৪ হাজার টিইইউএস রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার জাহাজিকরণ করে বন্দরের স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। তবে এসব পণ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, রপ্তানি পণ্যগুলো সময়মতো জাহাজিকরণ না হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে সিঙ্গাপুর বা কলম্বোর বন্দরে পৌঁছানো নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এতে ইউরোপ ও আমেরিকামুখী মাদার ভেসেল ধরতে না পারার আশঙ্কা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত ক্রেতারা পণ্যগুলো গ্রহণ করবেন কিনা, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, কাস্টমস কর্মকর্তাদের আন্দোলনের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় দেশের আমদানি-রপ্তানি খাতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে না পারলে গার্মেন্টস সেক্টরকে এর বড় মূল্য দিতে হতে পারে।
চট্টগ্রাম সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন জানান, গত রাতেই রপ্তানি পণ্যের কাস্টমস ছাড়পত্র ও পরিবহন শুরু হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে আমদানি পণ্যের কাগজপত্র প্রক্রিয়াকরণে কাস্টমস ও এজেন্ট কর্মীরা কাজ করছেন।
তিনি বলেন, এই অচলাবস্থায় যে বাণিজ্যিক ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করা সম্ভব নয়। তবে কাস্টমস কর্মকর্তারা আন্তরিকভাবে আটকে থাকা কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম কাস্টমসের একজন কর্মকর্তা জানান, এটি চট্টগ্রাম কাস্টমসের কোনো নিজস্ব কর্মসূচি ছিল না। তারা কেন্দ্রীয় সংগঠনের কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেন, কাস্টমস দৈনিক প্রায় ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে। কর্মবিরতির কারণে সরকার সাময়িকভাবে রাজস্ব হারালেও ব্যবসায়ীরা পণ্য ছাড় করানোর আগে তা পরিশোধ করে দেবেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, বন্দরে কনটেইনার ডেলিভারিসহ সব কার্যক্রম এখন পুরোপুরি সচল রয়েছে এবং অতিরিক্ত কনটেইনারগুলো দ্রুত ছাড় করা হবে।
সর্বশেষ খবর
কৃষি, অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর