
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার যমুনা নদী তীরবর্তী সোনামুই ও মধুপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী নারায়ণপুর গ্রামের গ্রাহকরা ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগ তুলেছেন। ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ (পিবিএস-১)-এর গোপালপুর জোনাল অফিসের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, অন্তত ৪০ জনের বেশি গ্রাহক অভিযোগ করেছেন, তাদের মিটারে ব্যবহৃত ইউনিটের চেয়ে ৫০ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বেশি বিল করা হয়েছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, মিটার না দেখেই অনুমান করে বিল তৈরি করা হচ্ছে। ফলে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে তারা বাধ্য হচ্ছেন, অন্যথায় গুনতে হচ্ছে জরিমানা।
গ্রাহকরা জানান, ১-৭৫ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল ভ্যাট ছাড়া ৫.২৬ টাকা এবং ৭৬-২০০ ইউনিট পর্যন্ত ৭.২০ টাকা হারে ধার্য করা হয়। এ কারণে তাদের অতিরিক্ত বিল দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
ধোপাকান্দি ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা তাওফিক আহমেদ জানান, গত ৮ তারিখে তার মিটারে ৬৬৩০ ইউনিট রিডিং লেখা ছিল, অথচ ৩০ তারিখে মিটারে রিডিং রয়েছে ৬৫৭৫ ইউনিট। তিনি অভিযোগ করেন, বিষয়টি অফিসকে জানালে তারা পরের মাসে সমন্বয়ের কথা বললেও বাস্তবে কোনো সমন্বয় করা হয় না। তার গ্রামের অধিকাংশ মিটারে বেশি রিডিং লেখা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ঝাওয়াইল ইউনিয়নের সোনামুই গ্রামের বিধবা রহিমা বেগম বলেন, আজ ৩০ তারিখে তার মিটারে ১১০৫ ইউনিট রিডিং আছে, অথচ ৮ তারিখে রিডিং লেখা হয়েছে ১২৬৫ ইউনিট। তিনি অভিযোগ করেন, এভাবে অতিরিক্ত বিল চাপিয়ে দিয়ে তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। স্বামী-সন্তান না থাকায় তিনি কিভাবে এই বিল পরিশোধ করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন। সময়মতো বিল পরিশোধ করতে না পারলে জরিমানাও গুনতে হয় বলে তিনি জানান।
সোনামুই মধ্যপাড়া জামে মসজিদের সদস্য বিপ্লব খান জানান, তাদের মসজিদের মিটারে আজ পর্যন্ত ১৬৮৬ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে, অথচ ২০ দিন আগে বিল করা হয়েছে ১৭২০ ইউনিট। এভাবে বাড়তি বিলের বোঝা চাপিয়ে দেয়া বন্ধ করা না হলে তারা গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানাবেন।
অভিযোগের বিষয়ে গোপালপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেন, রিডিং লেখার সময় ভুল হতে পারে। তবে গ্রাহকরা অভিযোগ করলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে গত নয় দিনে ১২-১৪টি ভুল সংশোধন করা হয়েছে। তিনি জানান, তার অফিসে ৭৫ হাজার গ্রাহক থাকলেও লোকবল সীমিত। কতজন গ্রাহকের এমন ভুল হয়েছে, সেই তথ্য তার কাছে নেই।
তবে, না দেখে রিডিং করার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, রিডিং দেখার জন্য নিয়মিত ফিল্ডে লোক পাঠানো হয়।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর