
চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ঢাকার মিডফোর্ডে লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) নামের এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোহাগের গ্রামের বাড়ি বরগুনায় এ ঘটনায় শোকের মাতম চলছে। শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা জানাতে আসা স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে সোহাগের মরদেহ বরগুনায় নিয়ে আসা হয়। পরে সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোহাগের যখন সাত মাস বয়স, তখন তার বাবা আইউব আলী বজ্রপাতে মারা যান। এরপর মা আলেয়া বেগম দুই কন্যা সন্তানসহ সোহাগকে নিয়ে জীবিকার সন্ধানে ঢাকায় পাড়ি জমান। সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার মিডফোর্ডে মেসার্স সোহানা মেটাল নামে একটি দোকান চালাতেন। অভিযোগ উঠেছে, ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হচ্ছিল। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় অভিযুক্তরা তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা লাগিয়ে দেয় এবং পরে তাকে পাথর মেরে হত্যা করে।
নিহত সোহাগের মেয়ে সোহানা ও ছেলে সোহান তাদের বাবার হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেছে।
সোহাগের খালা সাজেদা বেগম জানান, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে তার ভাইয়ের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি দখল করতে চেয়েছিল।
এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন সোহাগের মামা মোঃ মন্টু মিয়া।
এদিকে, সোহাগের স্ত্রী লাকি বেগম জানান, চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় সোহাগকে হত্যার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বরগুনায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় বরগুনা প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষ অংশ নেন। বক্তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পাশাপাশি তারা সোহাগের পরিবারের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নেওয়ার আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর