
পাবনা: রাজমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা নূর আলী (৪৭) নামের এক ব্যক্তি দশ বছরের ব্যবধানে কোটিপতি বনে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের বোঁথড় মধ্যপাড়া গ্রামে তার এখন কোটি টাকা মূল্যের তিনতলা আলিশান বাড়ি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নূর আলী ‘বোঁথড় ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামের একটি এনজিও খুলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করে এই বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার প্রতারণার শিকার হয়ে ভুক্তভোগীরা স্থানীয় প্রশাসন ও সমবায় অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো সুফল পাননি।
অভিযোগে জানা যায়, দরিদ্র পরিবারের সন্তান নূর আলী এক সময় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ২০০৮ সালে এনজিও খুলে কিস্তিতে ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি ও ঋণদান কার্যক্রম শুরু করেন। লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে কয়েকজনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেন।
ভুক্তভোগী তাহমিনা খাতুন জানান, তিনি প্রথমে এক লাখ ৬৮ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন এবং পরবর্তীতে বার্ষিক ১২% লভ্যাংশের শর্তে ২৮ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করেন। তবে গত ২২ মাস ধরে তিনি লভ্যাংশ পাচ্ছেন না এবং আসল টাকাও ফেরত দেওয়া হচ্ছে না।
মিনা রানী নামের আরেকজন জানান, তিনি নূর আলীর এনজিওতে মাঠকর্মী হিসেবে চাকরি করতেন এবং তার বেতন থেকে প্রতি মাসে সঞ্চয়ী হিসাবের জন্য টাকা কেটে রাখা হতো। চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হলেও তার জামানতের টাকা এখনো ফেরত দেওয়া হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, "আমরা দেখেছি সে রাজমিস্ত্রির কাজ করতো। খুব কষ্টে দিন পার করেছে। এখন তার তিনতলা বাড়ি। আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে।"
অভিযোগের বিষয়ে নূর আলী বলেন, "আমাদের সমিতির অবস্থা খারাপ। করোনার পর থেকে আমরা সমস্যায় পড়ে গেছি। ঋণের টাকা অনেকেই দিচ্ছে না।" বাড়ি নির্মাণে কত খরচ হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কোনো হিসাব দিতে পারেননি।
চাটমোহর উপজেলা সমবায় অফিসার মুর্শিদা খাতুন জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি জেলা অফিসে জানানো হয়েছে। তদন্তের পর সত্যতা পাওয়া গেলে ওই এনজিওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী জানান, অভিযোগের প্রমাণ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর