
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বীরগ্রামের কালু মিয়ার বাড়ি থেকে পেংড়াপাড়া এবং খোট্টাপাড়া খেলার মাঠ থেকে দড়িমুকন্দ পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা এখনও উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি। প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে শত শত মানুষ যাতায়াত করলেও রাস্তাটির উন্নয়ন না হওয়ায় মানুষের জীবনমান, কৃষি উৎপাদন, শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ভোগান্তিতে রয়েছে ৮টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, এই রাস্তা দিয়ে খোট্টাপাড়া, বীরগ্রাম, ভাদাইশপাড়া, রাজবাড়ী, বাঘমারা, হাতিগাড়া, কদিমুকন্দ ও পেংড়াপাড়া—এই আটটি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করে। বিশেষ করে এই অঞ্চলটি কৃষি ও মৎস্য খামারনির্ভর। এখানে প্রায় ৫০টি ছোট-বড় পুকুরে মাছ চাষ হয়, কিন্তু রাস্তাঘাট ভালো না থাকায় সময়মতো বাজারে মাছ পরিবহন করা সম্ভব হয় না, ফলে চাষিরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন। এছাড়াও, এই গ্রামগুলোতে প্রায় ১ হাজার একর জমিতে ধান, মরিচ, আলু, পাটসহ নানা ফসল চাষ হয়। রাস্তার দুরবস্থার কারণে এসব ফসল পরিবহন করতে গিয়ে কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়, ফলে অনেক কৃষক চাষাবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
শুধু কৃষি নয়, শিক্ষার ক্ষেত্রেও পড়েছে মারাত্মক প্রভাব। ওই আটটি গ্রামের শিক্ষার্থীরা স্কুল ও কলেজে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রতিদিন কর্দমাক্ত ও ভাঙাচোরা অবস্থার কারণে স্কুলে যেতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। এতে পিছিয়ে পড়ছে এলাকার শিক্ষা। চিকিৎসার ক্ষেত্রেও একই চিত্র। কেউ হঠাৎ অসুস্থ হলে, তাকে সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ায় জীবনের ঝুঁকি বাড়ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা খোট্টাপাড়ার আব্দুল আজিজ, ইসমাইল, সোলাইমান বলেন, "আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে বসবাস করি, কিন্তু রাস্তার কারণে পিছিয়ে থাকায় শিক্ষা, চিকিৎসা ও কৃষিতে তেমন উন্নয়ন করতে পারছি না। এই রাস্তা পাকা হলে আমাদের আটটি গ্রাম আরও উন্নত হবে।" বীরগ্রাম দড়িমুকন্দ ও ভাদাইশপাড়া গ্রামের কালু, রঞ্জু মিয়া এবং রাইসুলসহ দশজন ব্যক্তি বলেন, "অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এ অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে অতি দ্রুত রাস্তা সংস্কারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। একদিকে উন্নয়ন হবে, অন্যদিকে মানুষের ভোগান্তি দূর হবে।"
মির্জাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বলেন, "রাস্তাটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।" এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ বলেন, "রাস্তাটি নতুন প্রকল্পে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি সামনের বরাদ্দ পাশ হয়ে আসবে।"
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর