• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২৩ মিনিট পূর্বে
মোহাম্মদ ফয়সাল
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৬ জুলাই, ২০২৫, ০৬:৪১ বিকাল

রাজনৈতিক পরিসরে নারী ও তরুণদের ভবিষ্যৎ: ঐক্যের আহ্বান চট্টগ্রামের নেতাদের

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবং তা বাড়াতে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা, সর্বস্তরের মানুষের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন ও ঐক্য প্রয়োজন—এমন মত ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। তাঁরা বলেন, গত জুলাইয়ে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানে নারীরা সক্রিয় থাকলেও ৫ আগস্টের পর কেন তারা দৃশ্যমান নন, সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি।

শনিবার (২৬ জুলাই) নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে: রাজনৈতিক পরিসরে নারী এবং তরুণদের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক সংলাপে তাঁরা এসব কথা বলেন। আয়োজিত এই মুক্ত আলোচনা “রাজনীতিতে নারী ও যুবাদের ক্ষমতায়ন” শীর্ষক চলমান প্রকল্পের অংশ। বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সহায়তায় আয়োজিত এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল তরুণ নাগরিকদের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যেখানে তারা জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মুক্ত সংলাপে অংশ নিতে পারে এবং যার মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক শাসন, স্বচ্ছতা ও প্রজন্মগত বোঝাপড়া উৎসাহিত হয়।

সিজিএস-এর সভাপতি জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত সংলাপে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, মহানগর জামায়াতের সাবেক আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার প্রধান সমন্বয়কারী জুবাইরুল হাসান আরিফ, জাতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি অশোক সাহা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপমন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ান এবং গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী হাসান মারুফ রুমি।

নারী ও তরুণদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ভূমিকা প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নারীর অধিকার রক্ষায় সকল রাজনৈতিক শক্তির ঐক্য প্রয়োজন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী নির্বাচনে আগের চেয়ে আরও বেশি নারী প্রার্থী দেখা যাবে।

“গত ১৬ বছরে বিএনপির ভেতরে অনেক নারী রাজনৈতিক পরিচিতি গড়ে তুলেছেন। আমরা চাই তাদের পূর্ণাঙ্গ নেতৃত্বে রূপান্তরের সুযোগ দিতে,” বলেন তিনি। এছাড়া তিনি বিএনপির তরুণ, প্রান্তিক কর্মীদের জন্য গঠিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও দলীয়ভাবে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথাও উল্লেখ করেন মেয়র।

“‘ভালো মেয়েরা রাজনীতি করে না’ এই ধারণা এখন বদলাচ্ছে, যা আমাদের গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক,” যোগ করেন তিনি।

মহানগর জামায়াতের সাবেক আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী বলেন, দেশের প্রায় সব ঐতিহাসিক আন্দোলনে নারীরা সক্রিয় ছিলেন, কিন্তু মূলধারার রাজনীতিতে তাদের প্রকৃত অন্তর্ভুক্তি ঘটেনি। এটা অবশ্যই বদলাতে হবে। জামায়াত ২৯৪টি আসনের মধ্যে ৩০টির বেশি আসনে তরুণ প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নারীনেত্রী সরাসরি নির্বাচিত হয়েছেন। গণতন্ত্র আগে না নারী-অংশগ্রহণ আগে, এই বিভাজনের দরকার নেই। দুইটি বিষয় সমান্তরালভাবে এগোতে হবে।

জাতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি অশোক সাহা বলেন, জুলাই আন্দোলন বৈষম্যবিরোধী প্রতিবাদ হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত। এইবার তরুণদের অংশগ্রহণ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ছিল। দীর্ঘদিনের পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতি এক ধরনের রাজনৈতিক ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যতদিন না আমরা নারীবিদ্বেষ এবং আদিবাসীদের প্রতি ঘৃণার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো, ততদিন ঐক্য সম্ভব নয়। এখন যুক্ত হয়েছে সাইবার হয়রানি—এই ঘৃণা দূর না হলে কার্যকর গণতন্ত্র স্থাপিত হবে না।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপমন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ান বলেন, যদিও নারী ও তরুণরা আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন, এক বছর পরে আমাদের নিজেকে জিজ্ঞেস করতে হবে, আমরা আসলে কোনো পরিবর্তন আনতে পেরেছি কিনা। পার্বত্য চট্টগ্রামে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ছে বলে জানান এবং তরুণ ও নারীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী হাসান মারুফ রুমি বলেন, “আন্দোলনের সময় যারা ভাইদের গ্রেপ্তার ঠেকিয়েছেন, সেই সাহসী নারীরা এখন কেন অনলাইনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন? কেন তাদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে?”

তিনি বলেন, গত ১৫ বছর নারীদের জন্য রাজনীতি করাটা ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আন্দোলনের পর এই বাধা কিছুটা কমলেও কাজ এখনো বাকি। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তাদের শুধু নারী শাখায় সীমাবদ্ধ না রেখে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে যুক্ত করতে হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার প্রধান সমন্বয়কারী জুবাইরুল হাসান আরিফ বলেন, এনসিপি সর্বোচ্চ পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এমন একটি প্রস্তাব দিয়েছি, যাতে ১০০টি সংসদীয় আসনে শুধু নারীরা সরাসরি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলো এখনো বুঝতে পারেনি, আন্দোলনের পর সমাজ কতটা বদলে গেছে। তাদের অবস্থান এখনো নারী ও তরুণদের দাবির থেকে অনেক দূরে।

বিভিন্ন শ্রেণি এবং পেশার লোকজনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রায় ২০০ জন এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন তাদের কাছে। সংরক্ষিত আসন কি সত্যিই নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ঘাটতি পূরণ করতে পারবে? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এ আই) প্রযুক্তির ঝুঁকি মোকাবেলায় নির্দিষ্ট কী পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে? জুলাই আন্দোলনে নারীরা নিজেরা এসে দাঁড়িয়েছিলেন, এখন তাদের ডেকে নিয়ে আসতে হয় কেন? আমরা শুধু ভোট দেব, নাকি ক্ষমতায়ও অংশ নেব? ৫ আগস্টের পর কেন নারীদের প্রতি সহিংসতা কেন বেড়েছে, এর প্রতিকারে করণীয় কী? একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রক্রিয়ায় নারী ও তরুণদের প্রকৃত অবদান কতটুকু—ইত্যাদি প্রশ্নের জবাব দেন তারা।

রার/সা.এ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]