
গাজীপুর: স্ত্রীকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার পর স্বামী নিজেই জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে জানান, "আমি আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলছি, আমি ঘরে আছি, আত্মসমর্পণ করব, আপনারা আমাকে নিয়ে যান।" স্ত্রী জেমি আক্তারকে (২০) হত্যার পর স্বামী রাকিব হাসান (২২) এভাবেই তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য আবেদন করেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)-এর কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানার চক্রবর্তী এলাকায় স্ত্রীকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন স্বামী।
নিহত গৃহবধূ জেমি আক্তার দিনাজপুর জেলার শেতাবগঞ্জ উপজেলার মিচরিগোলা গ্রামের জাহিদুল ইসলামের মেয়ে। তাঁর স্বামী রাকিব হাসান বগুড়া জেলার লতিফপুর গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে। তাঁদের সংসারে দুই বছর বয়সী তাজিম এবং দুই মাস বয়সী রাইসা আক্তার জেরীন নামের দুই শিশু সন্তান রয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)-এর কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জেমি ও রাকিব দম্পতির মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। স্থানীয়ভাবে কয়েকবার মীমাংসাও করে দেওয়া হয়েছিল।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর কোনো একসময় রাকিব তাঁর স্ত্রীকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন। পরে তিনি নিজেই জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে নিজ ঘরেই পুলিশের জন্য অপেক্ষা করেন। ঘরের ভেতর মায়ের নিথর দেহের পাশে দুই শিশু সন্তান তাজিম ও রাইসা আক্তার জেরীন কাঁদছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামী রাকিব হাসানকে কাঁদতে দেখেন এবং ঘরের মেঝেতে স্ত্রীর লাশ দেখতে পান।
পুলিশ রাকিবকে হাতকড়া পরানোর সময় তাঁকে অনুশোচনা করে কাঁদতে দেখা যায়। তাঁদের স্বজনেরা কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকেন, "রাকিব রে তুই কী করলি। এখন তোর বাচ্চা দুইটারে কে দেখবে?" তাঁদের কান্না উপস্থিত সবাইকে আবেগাপ্লুত করে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সর্বশেষ খবর