
অস্ত্রধারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারের ওয়াকিটকিতে দেওয়া বার্তা ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার পুলিশ কনস্টেবল অমি দাশকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দীন পুলিশের রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে রবিবার (১৭ আগস্ট) দিবাগত রাতে খুলশী থানা এলাকা থেকে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলায় অমি দাশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অমি দাশকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অমি দাশ ছাত্রজীবনে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সঙ্গে পটিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী ও মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য প্রয়াত মোসলেম উদ্দিন আহমদ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আ. জ. ম. নাছির উদ্দীনের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি রয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতাদের সুপারিশে ২০১৩ সালে পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে যোগ দেন। তিনি পুলিশের টেলিকম ইউনিটে কর্মরত। তবে বর্তমানে তিনি প্রেষণে চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানায় অপারেটর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার রামকৃষ্ণ মিশন রোডের সূর্য মহাজন বাড়ি এলাকায়। অমির বাবা রাজীব দাশ পটিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক।
প্রসঙ্গত, গত ১২ আগস্ট চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ ওয়্যারলেসে সিএমপির সব সদস্যকে উদ্দেশ করে জরুরি নির্দেশনা দেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ গুরুতর আহত হওয়ার পর কমিশনার এই নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগের নিয়ম অনুযায়ী সব টহল ও ডিবি টিমকে অস্ত্র এবং লাইভ অ্যামুনিশন বহন করতে হবে। শুধু মাত্র রাবার বুলেট দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। কোনো টহল টিমের সামনে যদি কেউ অস্ত্র বের করে-সেটা ধারালো অস্ত্র হোক বা আগ্নেয়াস্ত্র-গুলি চালাতে হবে। সরকারি গুলি যেন সর্বোচ্চ কাজে লাগানো হয়, সেই নির্দেশও দেন তিনি।
কমিশনারের এই বক্তব্য ওয়াকি-টকি ও ভিডিওতে রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে চাপে পড়ে সিএমপির শীর্ষ কর্মকর্তারা। পরে বিশেষ টিম তদন্ত চালিয়ে অমি দাশকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে।
১১ আগস্ট দিবাগত রাত ২টার দিকে সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের মিছিলে পুলিশ পৌঁছালে সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীদের হামলায় এসআই আবু সাঈদ গুরুতর আহত হন। এর পরদিন রাতেই কমিশনারের ওই কড়া নির্দেশনা আসে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর