
বরিশালে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হোসাইন আল সুহানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা। তিনি নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে সুহানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। এতে বিপাকে পড়েন থানার সেবাগ্রহীতারা। পুলিশ জানিয়েছে, আইনানুযায়ী সুহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ছাত্রলীগ নেতা। তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা রয়েছে।
এর আগে, সুহানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গতকাল দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও করে সামনের সড়ক আটকে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। এরপর সন্ধ্যা ৭টা থেকে কোতয়ালি মডেল থানা ঘেরাও করে মূল দরজা আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। তার আগে স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর দাবিসহ স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
এদিকে, সুহানের গ্রেপ্তারের খবরে রোববার দুপুর থেকে ডাকা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে কাজে ফিরেছেন শেবাচিম হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা জানান, আন্দোলনের নামে হাসপাতালের ডাক্তারকে মারধরের প্রতিবাদে তারা ধর্মঘট করছিলেন।
বরিশালের পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানান, বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের ওপর হামলার মামলাসহ জুলাই অভ্যুত্থানে হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া আরও একটি মামলায় সুহানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এরপর আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের সদস্য তাহমিদ ইসলাম দাইয়ান বলেন, ‘মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ছিল আমাদের। তাই আমরা নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিই। সেখান থেকে পুলিশ আমাদের সমন্বয়ক সুহানকে ধরে নিয়ে গেছে। তার মুক্তির দাবিতে আমরা এখন থানায় অবস্থান নিয়েছি।’
কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রলীগের ক্যাডার সুহান বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও পলাতক শেখ হাসিনার মামাতো ভাই খোকন সেরনিয়াবাতের অনুসারী।
তাকে গ্রেপ্তারের সময় স্বাস্থ্যখাত আন্দোলনের কয়েকজন সদস্য জোর করে টহল পিকআপে উঠেছিল। তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সুহানকে হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মচারী মামলার আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হবে।’
এর আগে, রোববার আন্দোলনের নামে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে হামলা চালিয়ে চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা কর্মচারীদের আহত করার অভিযোগে শেবাচিমের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী বাহাদুর শিকদার বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন।
মামলায় স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক মহিউদ্দিন রনির নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৮০ জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে আইন অমান্য করে জনতার ওপর হামলা, হত্যা করতে আঘাতসহ মারধর-জখম করাসহ হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনা দূর, রোগীদের হয়রানি ও স্বাস্থ্যখাতের সিন্ডিকেট ভাঙার দাবিতে গত ২৩ দিন ধরে চলমান এই আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কয়েকজন নেতা।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর