
কক্সবাজারের উখিয়ায় চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের বিক্ষোভ ঘিরে টানটান উত্তেজনায় কেটেছে বুধবার (২০ আগস্ট) দিনভর। রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় চাকরি ফেরতের দাবিতে সড়ক অবরোধ করতে গেলে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া এবং আটক-আহতের ঘটনা ঘটে।
ভোরে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ এলাকায় অবস্থান নেন চাকরিচ্যুত শিক্ষকেরা। সকাল ৭টার দিকে তাঁরা সড়ক অবরোধ করে এবং কিছুক্ষণ পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পমুখী সংযোগ সড়কও বন্ধ করে দেন। এতে যানজট সৃষ্টি হয়ে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
শিক্ষকদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ আকস্মিক লাঠিচার্জ চালায়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। এ সময় মুখপাত্র সাইদুল ইসলাম শামীমসহ সাতজনকে আটক করে পুলিশ। পরে আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হলে আরও ২০ জন শিক্ষক সেখান থেকে আটক হন।
আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়েকশো শিক্ষক উখিয়া থানার সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁরা ওসির পদত্যাগ দাবি করে প্রিজনভ্যান আটকে দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুপুরে আন্দোলনকারীরা থানার ফটকের তালা ভাঙার চেষ্টা করলে ফের লাঠিচার্জ হয়। এতে এনসিপির জেলা সংগঠক খালিদ বিন সাঈদ ও এক সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে বিএনপি, এনসিপি, জামায়াত ও গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের আলোচনা চলে। অবশেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সমঝোতার মাধ্যমে আটক ২৭ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়।
মুক্তি পাওয়ার পর উখিয়া শহীদ মিনারে সমাবেশ করেন শিক্ষকেরা। আন্দোলনের সমন্বয়ক শামিম হোসেন অভিযোগ করেন, “ওসি আমাদের অশালীন গালাগাল করেছে, হ্যান্ডকাফ পরিয়ে নির্যাতন করেছে। আমরা এর বিচার চাই।”
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানীয় বাংলাদেশি শিক্ষকেরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু গত জুলাইয়ে অর্থসংকটের কারণে প্রায় ১২০০ শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপর থেকেই তাঁরা চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
গত সোমবারও তাঁরা কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ—প্রশাসন বারবার আশ্বাস দিলেও কোনো কার্যকর সমাধান এখনো মেলেনি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা পুলিশের মুখপাত্র) মো. জসীম উদ্দিন জানান, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এবং আর কোনো বিশৃঙ্খলা না করার শর্তে মুচলেকা নিয়ে ২৭ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর