
ঢাকা কাস্টমস হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মাজেদ ও এনামুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা ঘোষণার আড়ালে চোরাচালান ছাড়ের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। রবিবার (১৭ আগস্ট) ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম এ অভিযোগ দেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, কাস্টমস হাউজের কর্মকর্তা মাজেদ ও এনামুল প্রতিষ্ঠানের ভেতর চোরাচালান ও দুর্নীতির জাল বিস্তার করেছেন। তাদের সঙ্গে সিনিয়র কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে মিথ্যা ঘোষণার আড়ালে গড়ে উঠেছে চোরাচালানের রাজত্ব। এ অবস্থায় বৈধভাবে শুল্ক পরিশোধ করে পণ্য খালাস নেওয়া এখন প্রায় অসম্ভব। অসাধু কর্মকর্তা ও চোরাচালান সিন্ডিকেট এয়ার ফ্রেইট ইউনিটের ডেলিভারি গেট-১ দিয়ে কমার্সিয়াল পণ্যের চালানের আড়ালে নিষিদ্ধ ইলেকট্রিক সিগারেট, সে ক্স টয়, পুরাতন ল্যাপটপ, শর্তযুক্ত পণ্য মোবাইল ফোন, মেডিসিন, ড্রোন, ওয়াকিটকি এবং উচ্চ শুল্কের পণ্য যেমন মোবাইল এলসিডি ও সানগ্লাস ভিআইপি মর্যাদায় খালাস দিচ্ছে। এসবের ক্ষেত্রে কোনও ঘোষণা বা আমদানি শর্ত মানা হচ্ছে না। এর ফলে সরকার প্রতিদিন ১০-১২ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। বাজার ভরে যাচ্ছে এসব অবৈধ ও নিষিদ্ধ পণ্যে, যার প্রভাবে বৈধ ব্যবসায়ীরা টিকে থাকতে পারছেন না। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা একদিকে প্রতিযোগিতায় হেরে যাচ্ছে, অন্যদিকে ফাঁকিকৃত রাজস্বের টাকা অসাধু কর্মকর্তাদের পকেটে যাচ্ছে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নতুন ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী প্রবাসী যাত্রী বছরে একবার মাত্র একটি নতুন মোবাইল ফোন ও সর্বোচ্চ দুটি ব্যবহৃত মোবাইল আনতে পারবেন। অথচ বৈধ আমদানিতে বিটিআরসির শর্ত ও ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ বাধ্যতামূলক। দেশে মোবাইল ফোনের বিপুল চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে চোরাচালান চক্র এবং কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তারা ডেলিভারি গেট-১-কে চোরাচালানের রুট বানিয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতিদিন চীন, হংকং, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা কমার্সিয়াল পণ্যের আড়ালে প্রায় আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার মোবাইল ফোন মিথ্যা ঘোষণায় শুল্ক ছাড়াই ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। এসব মোবাইল ফোন থেকে সরকারের দৈনিক ৬ থেকে ৭ কোটি টাকার শুল্ককর হারাচ্ছে। এতে বৈধ আমদানিকারকেরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি কমার্সিয়াল চালানের আড়ালে ইলেকট্রিক সিগারেট, সে ক্স টয়, পুরাতন ল্যাপটপ, মাদকদ্রব্য, মেডিসিন, ড্রোন, ওয়াকিটকি চোরাচালান হচ্ছে ৬০ শতাংশ কমিশনের বিনিময়ে। অর্থাৎ, কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তারা রাজস্ব ফাঁকির মোট অঙ্ক থেকে ৬০ শতাংশ কমিশন হিসেবে ঘুষ নিচ্ছেন। তাই এই চোরাকারবারী সিন্ডিকেট সঙ্গে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত পূর্বক সাধারণ ব্যবসায়ীদের বৈধ ব্যবসার স্বাভাবিক পথ সুগম করার জন্য আবেদনে আর্জি জানানো হয়।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর