
গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় ঢুকে পুলিশকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় আটক যুবক সিজু মিয়ার পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধারের পর এবার ওই ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে নিহত সিজুর মা রিক্তা বেগম সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে (সাঘাটা) মামলাটি দায়ের করেন।
নিহত সিজু মিয়া (২৫) সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাগুরিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং গিদারি ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন।
মামলায় সাঘাটা থানার ওসি, এসআই ও এএসআইসহ মোট ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন নামীয় আসামি এবং ৪-৫ জন অজ্ঞাতনামা। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন এবং আগামী ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আল আসাদ।
নামীয় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাদশা আলম, এএসআই রাকিবুল ইসলাম, মশিউর রহমান, মহসিন আলী সরকার, আহসান হাবিব, উজ্জল হোসেন ও লিটন মিয়া (ডিউটি অফিসার)। এছাড়া পুলিশ সদস্য হামিদুল ইসলাম, আজাদুল ইসলাম, নয়ন চন্দ্র, জয় চন্দ্র, ধর্মচন্দ্র বর্মণ এবং স্থানীয় সাব্বির হোসেন, ইউসুফ আলী ও মমিনুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২৪ জুলাই বিকেলে গাইবান্ধা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস চত্বর থেকে সিজুকে থানায় ডেকে নেয় পুলিশ। সেখানে তাকে নির্যাতনের পর গুরুতর আহত অবস্থায় থানা সংলগ্ন পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। পরে লাঠি দিয়ে আঘাত করে হত্যার পর ওই ঘটনাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়। পরদিন সকালে একই পুকুর থেকে ডুবুরি দল তার মরদেহ উদ্ধার করে।
উল্লেখ্য, ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিজু সাঘাটা থানায় প্রবেশ করে এএসআই মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাত করে আহত করে এবং রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর থানার পেছনে থাকা সাঘাটা হাই স্কুলের পুকুরে ঝাঁপ দেয় বলে পুলিশের দাবি। গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়েও তাকে না পাওয়া গেলেও, পরদিন সকালেই ওই পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়।
এ সময় পুলিশ দাবি করে সিজু মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তবে পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুকুরে থাকা অবস্থায় সিজুকে লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে। এতে স্বজনরা অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে তারা সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
এরপর ঘটনাটির তদন্তে রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম গাইবান্ধায় আসে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর