
স্থায়ী ক্যাম্পাস, ক্যাম্পাসের অচলাবস্থা নিরসন, শক্তিশালী ও কার্যকরী প্রশাসন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির অস্থায়ী ক্যাম্পাস সরকারি গুরুদয়াল কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে উপাচার্যের কার্যালয়, রেজিস্ট্রার ও বিভাগীয় অফিসসহ বেশ কয়েকটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলার সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. দিলীপ কুমার বড়ুয়া কয়েকজন শিক্ষককে সাথে নিয়ে দাবি-দাওয়ার বিষয়ে কথা বলে আন্দোলনকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২৪শে জানুয়ারি মন্ত্রিসভা বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২১ সালের ২৫শে জানুয়ারি উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে। এরপর ২০২৩ সালের ৩রা মার্চ সরকারি গুরুদয়াল কলেজের একটি বহুতল ভবনে অস্থায়ীভাবে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়। নানা জটিলতায় ভূমি অধিগ্রহণের কাজ আটকে থাকায় এখনও নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। এ রকম পরিস্থিতিতে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে জোড়াতালি দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ফলে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়েও সেরকম কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বলেন, আমরা একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট হয়ে যা সুবিধা পাওয়া দরকার, তা আমরা পাচ্ছি না। আমরা অন্য একজনের হাতে বন্দি অবস্থায় থাকার মতো এখানে আছি। আমাদের প্রয়োজন মতো ল্যাব নেই। শ্রেণিকক্ষ সীমিত। এছাড়া একই ভবনে গুরুদয়াল সরকারি কলেজের কার্যক্রম চলায় তাদের পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ রাখতে হয়। ফলে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না। এসব কারণে আমাদের সেমিস্টার শেষ হতে সময় বেশি যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থা খুব নাজুক। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাসহ সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ কিংবা ভূমিকা রাখতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২য় ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রমজান বলেন, অতি শীঘ্রই আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাস চাই, শক্তিশালী প্রশাসন চাই। আমরা অভ্যন্তরীণ অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি, এসব পূরণ করতে হবে। এছাড়া আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আজকে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটডাউন ঘোষণা করছি। আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। কোনো ধরনের ক্লাস, পরীক্ষা, ল্যাব আমরা করবো না।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নায়লা ইয়াছমীন বলেন, সরকার পরিবর্তনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ থেমে যায়। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে নতুন করে আবার প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেছে। এরপর থেকে আমরা সার্ভেসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি যেন দ্রুত ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করা যায়। ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হওয়ার পর নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজে হাত দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও দ্রুত নিজস্ব ক্যাম্পাসে যেতে চায়। শিক্ষার্থীদের আমরা বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করছি।
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর