
এলসিএল পদ্ধতিতে মোংলা বন্দরে কন্টেইনারে পণ্য আমদানি-রফতানি উন্মুক্ত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ছোট-বড় সকল ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদা মতো পণ্য আমদানি-রফতানি করতে পারবেন। এরপর আমদানী বা রপ্তানিকৃত পণ্য বন্দরের ইয়ার্ডে রেখে পরে ছাড় করিয়ে নেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন মোংলা বন্দরে এফসিএল সুবিধা নিয়ে কন্টেইনারে পণ্য আমদানি করতো ব্যবসায়ীরা। তবে ওই পদ্ধতিতে সামর্থ্য না থাকায় সকল আমদানিকারকগণ আমদানি করতে পারতেন না। কারণ একটি কন্টেইনার পুরোপুরি বোঝাই করে একটি মাত্র আমদানিকারকে পণ্য আমদানি করতে হতো। এর প্রেক্ষিতে দীর্ঘদিন ব্যবসায়ীদের দাবি ছিলো কয়েকজন আমদানিকারক মিলে একই কন্টেইনারে পণ্য আমদানি সুযোগ দেওয়ার।
গেলো জুন মাসে মোংলা বন্দর কাস্টমস এজেন্ট এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এলসিএল সুবিধা চালুর জন্য মোংলা বন্দর চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়। সম্প্রতি মোংলা কাস্টমস হাউজ পরিদর্শনে এলে এনবিআরের চেয়ারম্যান এর কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন কাস্টম এজেন্ট এসোসিয়েশনের আহবায়ক মো: মোশাররফ হোসেন। তখন মৌখিক সম্মতি দেন এনবিআরের চেয়ারম্যান। সর্বশেষ চলতি মাসের ৭ আগস্ট মোংলা বন্দরের পক্ষ থেকে উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মো: কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দিয়ে ব্যবসায়ীদের এলসিএল সুবিধায় মোংলা বন্দরের মাধ্যমে পণ্য আমদানির অনুরোধ করা হয়।
মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মো. কামাল হোসেন জানান, এলসিএল এর মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রফতানি সহজীকরণের লক্ষে ওয়্যারহাউজ বা প্রয়োজনে স্টাফিং-আনস্টাফিং শেডে কায়িক পরীক্ষাসহ ডেলিভারি করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এই সুযোগ গ্রহণ করার জন্য সকল ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান বন্দরের এই কর্মকর্তা।
মোংলা বন্দর কাস্টমস এজেন্ট এসোসিয়েশন এর আহবায়ক মো: মোশারফ হোসেন জানান, অনেক ছোট ছোট আমদানিকারক আছেন যারা কয়েকজন মিলে তাদের চাহিদা মতো পণ্য কন্টেনারের মাধ্যমে আমদানি-রফতানি করতে চান। কিন্তু এলসিএল সুবিধা না পাওয়ায় তারা এতোদিন মোংলা বন্দরের মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রফতানি করতে পারছিলেন না। মোংলা বন্দর কতৃপক্ষ চিঠি দিয়ে এলসিএল সুবিধা ব্যবহারের মাধ্যমে মোংলা বন্দর দিয়ে পণ্য আনা নেওয়ার সুযোগ দেওয়ায় বন্দর চেয়ারম্যান ও এনবিআরের চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানান মোশাররফ হোসেন।
মোংলা বন্দরের উপ-পরিচালক মো: মাকরুজ্জামান মুন্সি জানান, এলসিএল পদ্ধতিতে পণ্য আমদানি মানে হলো, যখন আপনার পণ্যের পরিমাণ পুরো একটি কন্টেইনার ভর্তি করার মতো হয় না, তখন আপনি অন্য আমদানিকারকদের পণ্যের সাথে একই কন্টেইনার ভাগ করে নিয়ে পণ্য আমদানি করেন। এটি কম পরিমাণে পণ্য আমদানির জন্য একটি সাশ্রয়ী উপায়, যা ‘গ্রুপপেজ শিপিং’ নামেও পরিচিত। সকল ব্যবসায়ীদের মোংলা বন্দর ব্যবহার করে পণ্য আমদানি-রফতানির সুযোগ দিতে মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান মহোদয় এলসিএল সুবিধার বিষয়টি ব্যবসায়ীদের অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্ধুরমুখী হবেন। এতে বন্দরে রাজস্ব আয় বাড়বে এবং দেশের বাজারে কমে আসবে পণ্যের বাজার মূল্য।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর