• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৩ সেকেন্ড পূর্বে
প্রচ্ছদ / জাতীয় / বিস্তারিত
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৩:৫৮ দুপুর

বাঁকখালীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে উত্তাল কক্সবাজার

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে আবারও বাধা সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে কয়েক শ নারী-পুরুষ শহরের প্রধান সড়কে নেমে অভিযানের বিরোধিতা করেন। এ সময় টায়ার জ্বালানো, ঠেলাগাড়ি ও গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করা হয়।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শুরু হওয়া অবরোধে শহরের প্রধান সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

গত ২৪ আগস্ট বাঁকখালী নদীর সীমানায় থাকা সব দখলদারের তালিকা তৈরি করে চার মাসের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর গত সোমবার বিআইডব্লিউটিএর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নদীর নুনিয়াছটা, ৬ নম্বর জেটিঘাট এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হওয়ার কথা ছিল। সকালে বিমানবন্দর সড়ক দিয়ে ৬ নম্বর ঘাটের দিকে খননযন্ত্র নেওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ জনগণ সেটি আটকে দেন এবং উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিমানবন্দর সড়ক ও প্রধান সড়কের ঝাউতলা থেকে লালদীঘির পাড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার অংশের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে রাখা হয়। এ ছাড়া সড়কে গাছের গুঁড়ি ও ঠেলাগাড়ি ফেলে রেখে বিক্ষোভ করেন বাসিন্দারা। বিক্ষোভের সময় সড়কে র‍্যাব-পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারী-পুরুষের অনেকে ৬ নম্বর জেটিঘাট, নতুন বাহারছড়া, নুনিয়াছটা ও পেশকারপাড়া থেকে এসেছেন। নদীপাড়ে তাঁদের অনেকের ঘরবাড়ি আছে।

অবরোধে অংশ নেওয়া এনামুল কবির ও আবদুল মালেক নামের দুই ব্যক্তি জানান, তাঁরা পেশকারপাড়া অংশে জমি কিনে ঘর করেছেন। এখন ঘর থেকে তাঁদের উচ্ছেদের কথা বলা হচ্ছে। তাই প্রতিবাদ জানাতে এসেছেন। দুজন আক্ষেপ করেন, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারি পাহাড়ে আশ্রয়শিবির তৈরি করা হয়েছে, কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না করে স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

কক্সবাজার-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী-বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান বলেন, হঠাৎ উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানোর ঘটনা জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলছে। হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ছেন। তাই তাঁরা রাস্তায় নেমে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি করেছেন।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস খান বলেন, বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনার সময় বৈধ ঘরবাড়িও ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এ কারণে তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের জানানো হয়, উচ্ছেদের আওতায় কোন স্থাপনা পড়েছে, তা লাল নিশানা তুলে চিহ্নিত করে দেওয়ার পর অভিযান চালানো হবে। এরপর তাঁরা অবরোধ প্রত্যাহার করে চলে গেছেন।

কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দিন শাহীন বলেন, অবরোধ তুলে নেওয়ায় দুপুর ১২টার আগেই শহরের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, অভিযান শুরুর দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার থেকেই বাধার মুখে পড়ে আসছে উচ্ছেদ অভিযান। সেদিন ইটের আঘাতে পুলিশের এক সদস্যের মাথা ফেটে যায়। এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিএর এক কর্মী আহত হন। পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর নদীর উত্তর পেশকারপাড়ার অংশে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গেলে সেখানেও বাধার মুখে পড়ে যৌথ বাহিনী ফিরে যায়।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. সালাহউদ্দিন দুপুরে বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে বাঁকখালী নদীতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএর এ উচ্ছেদ অভিযানে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, অভিযানের দ্বিতীয় দিন থেকেই উচ্ছেদবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে, হামলা হচ্ছে। আজকে সড়ক অবরোধ হলো, তাতে জনদুর্ভোগও বাড়ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে কীভাবে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা যায়, সেই চেষ্টা করছি।

বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন শাখা) কে এম আরিফ উদ্দিন বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে বাধার মুখেও এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ একরের মতো নদীর জমি উদ্ধার করতে পেরেছেন। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে ৪০০-এর বেশি। নদীর জমি দখল ও ভরাট করে শহরের নুনিয়াছটা থেকে খুরুশকুল সেতু পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারে যেসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে, সেসব উচ্ছেদ করতে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে।

পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, যৌথ বাহিনীর উচ্ছেদ অভিযানে বাধা, হামলা ও হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাধার ঘটনায় এ পর্যন্ত কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এতে ২১ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৬৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এজাহারভুক্ত চার আসামিকে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com