
আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছরের মতো এবারও ১২ রবিউল আউয়াল জশনে জুলুছে ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (দ.)-এর আয়োজন করা হয়েছে। এবার জুলুসে নেতৃত্ব দেবেন দরবারে সিরিকটের সাজ্জাদানশিন পীর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ (ম জি আ)। বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মা.জি.আ) ও সৈয়্যদ মুহাম্মদ মেহমুদ আহমদ শাহ্ (মা.জি.আ)। তবে জুলুসে ড্রাম সেট আনা, নারীর অংশগ্রহণ এবং খাবার নিক্ষেপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) ষোলশহর আলমগীর খানকায়ে কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তৈয়বিয়ায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, রাসূল (সা.) এ ধরাপৃষ্ঠে শুভাগমনের পনেরশ’ বছর পূর্তি এবার। এই বছর আনজুমান ট্রাস্ট শতবর্ষ পূর্ণ করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম মিলাদ শোভাযাত্রা হিসেবে আলোচিত এ জুলুসকে এখন চট্টগ্রামের ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক হিসেবেও গণ্য করা হয়। তাই এর শরিয়ত সম্মত ঐতিহ্য রক্ষা করাও আমাদের দায়িত্ব।
তিনি জুলুসের সার্বিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য পুলিশ প্রশাসন ও নির্ধারিত স্বেচ্ছাসেবকদের দিকনির্দেশনা বিশেষ করে আনজুমান ট্রাস্ট ঘোষিত নিয়ম মেনে চলার উদাত্ত আহ্বান জানান।
জুলুসকে কেন্দ্র করে নগরের বিভিন্ন মোড়ে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে, অলিগলিতে পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা, বিভিন্ন খানকা ও নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ইতোমধ্যে আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে।
এবারের জুলুসের রুট সামান্য সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। মুরাদপুরের জামেয়া মাদরাসা সংলগ্ন ষোলশহর আলমগীর খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে যাত্রা শুরু হবে। এরপর মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট হয়ে জিইসির পেনিনসুলার সামনে দিয়ে শোভাযাত্রা জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা মাঠে গিয়ে শেষ হবে। সেখানে দেশবরেণ্য আলেমরা বক্তব্য রাখবেন এবং দেশ ও জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ মোনাজাত হবে।
জুলুস মিডিয়া কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবু তালেব বেলাল জানান, মুসল্লিরা যাতে নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করতে পারেন এবং আগামীকালের জুলুসে অংশ নিতে পারেন সে জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকরা দিনরাত কাজ করছেন। নগরের প্রতিটি সড়কে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এবারের জুলুসে কোটি মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী এই আয়োজন ইসলামী ঐতিহ্যের অনন্য নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত।
প্রায় একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই জুলুস। আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উদ্যোগে ১৯৭৪ সালে শুরু হয়েছিল এ আয়োজন। ধীরে ধীরে এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছর এ আয়োজনে অংশগ্রহণ বাড়ছে। বর্তমানে এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশে পরিণত হয়েছে।
এদিকে জুলুসকে ঘিরে চট্টগ্রাম নগরীর মোড়ে মোড়ে দৃষ্টিনন্দন তোরণ, পতাকা, আলোকসজ্জা ও ব্যানারের বাহার চোখে পড়ছে। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় চলছে মিলাদ মাহফিল ও ফাতেহার আয়োজন। ফলে পুরো নগরী এখন উৎসবের আবহে মুখরিত।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর