
লোহিত সাগরে একাধিক সাবমেরিন ক্যাবল বিচ্ছিন্ন হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেটে বড় ধরনের ব্যাঘাত দেখা দিয়েছে। এতে ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইন্টারনেটের গতি ধীর হয়ে গেছে এবং মাঝে মাঝে সংযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট জানিয়েছে, এই ক্যাবল বিঘ্নের কারণে তাদের আজুর ক্লাউড সার্ভিসের কার্যক্রমে প্রভাব পড়েছে। তবে সাধারণ নেটওয়ার্ক ট্র্যাফিক এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে। মাইক্রোসফট জানিয়েছে, ৬ সেপ্টেম্বর ভোর ৫:৪৫ GMT থেকে এই সমস্যা শুরু হয়। তারা পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন আপডেট প্রকাশ করবে।
ইন্টারনেট সংযোগ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা জানিয়েছে, SMW4 এবং IMEWE নামের সাবমেরিন ক্যাবলগুলোতে ক্ষতির কারণে জেদ্দার আশেপাশের এলাকায় প্রথমে সংযোগ সমস্যা দেখা দেয়। পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশনস তাদের গ্রাহকদের সতর্ক করেছে যে, পিক আওয়ারে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক অংশীদাররা সমস্যা সমাধানে কাজ করছে।
সমুদ্রের নিচে বসানো এই কেবলগুলো বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ট্র্যাফিকের মূল ধনুক, যা ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যকে সংযুক্ত করে। এগুলো দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতির পাশাপাশি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলার শিকারও হতে পারে। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে ইয়েমেনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সরকার দাবি করেছিল, হুথি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে সাবমেরিন ক্যাবল কেটে ফেলার পরিকল্পনা করেছিল। যদিও হুথিরা তা অস্বীকার করে, হুথি-নিয়ন্ত্রিত আল মাসিরাহ টিভি NetBlocks-এর তথ্য উদ্ধৃত করে এই বিঘ্নের সত্যতা আংশিকভাবে স্বীকার করেছে।
এদিকে মাইক্রোসফটকে নিয়ে নতুন বিতর্কও সামনে এসেছে। দ্য গার্ডিয়ান, +972 ম্যাগাজিন এবং লোকাল কল-এর যৌথ অনুসন্ধানে বলা হয়েছে, মাইক্রোসফটের আজুর ক্লাউড ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে পশ্চিম তীর ও গাজার ফিলিস্তিনি নাগরিকদের কল ও তথ্য সংরক্ষণে ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করেছে। মাইক্রোসফট এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে, তবে আগস্টে বিষয়টি নিয়ে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করে এবং এই ইস্যুতে প্রতিবাদে অংশ নেওয়া চার কর্মীকে বরখাস্ত করেছে।
কেবলগুলোর মেরামত করা জটিল এবং সময়সাপেক্ষ, সাধারণত সপ্তাহ বা মাস সময় লাগে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলো এবং টেলিকম অপারেটররা দ্রুত পূর্ণ সংযোগ পুনঃস্থাপনের জন্য কাজ করছে। এই ঘটনা বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট অবকাঠামোর দুর্বলতা এবং মহাদেশগুলোর মধ্যে সংযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে সাবমেরিন ক্যাবলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রমাণ করেছে।
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর