
বগুড়ার শেরপুরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক আবু বক্কর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সুমন সরকার (৩৭) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সুমন বাগড়া কলোনি এলাকার আব্দুল মালেক সরকারের ছেলে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে কুসুম্বি ইউনিয়নের গোসাইবাড়ি বটতলা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
তদন্তে জানা যায়, সুমন ও তার দুই সহযোগী মিলে মাদক কেনার টাকার জন্য ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। নিহত আবু বক্কর তাদের বন্ধু হওয়ায় তার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রিজার্ভ নিত। তারা আগে থেকেই জানতো যে সম্প্রতি সে নতুন ব্যাটারি কিনেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১ সেপ্টেম্বর সকালে তারা ধুনটমোড় থেকে অটোরিকশা ভাড়া করে শেরপুর ও ধুনট উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে। পরে মির্জাপুর থেকে চার বোতল বাংলা মদ কেনে এবং এক বোতলে ঘুমের ওষুধ মেশায়। বিকেলে বথুয়াবাড়ি ব্রিজের পাশের বালুচরে বসে সবাই একসাথে মদ পান করে। ওষুধ মেশানো মদ আবু বক্করকে পান করানোর পর সে অচেতন হয়ে পড়লে রাত ১০টার দিকে সুমনসহ তিনজন মিলে বাগড়া এলাকায় পুকুরপাড়ে এনে তাকে গলা টিপে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেয়। এরপর তারা অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
রাতে বৃষ্টি ও মাদক সেবনে শরীর ক্লান্ত হওয়ার কারণে মির্জাপুর ব্রিজের নিচেই দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে। এরপর ভোরে অটোরিকশা চালিয়ে চান্দাইকোনার দিকে যাওয়ার সময় ঘোগা বটতলা পৌঁছালে অটোরিকশার চার্জ শেষ হয়ে যায়। এরপর অটোরিকশাটি ফেলে রেখে ব্যাটারি ও চাকা খুলে নেয়। পরে চাকা বিক্রি করলেও নতুন ব্যাটারি ধুনটে বিক্রি করতে গেলে দোকানদার কাগজপত্র চাইলে কাগজপত্র নিয়ে আসার কথা বলে ব্যাটারি ফেলে পালিয়ে যায়।
গত ৯ সেপ্টেম্বর বাগড়া পুকুর থেকে লাশ উদ্ধারের পর শেরপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এরপর শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নুল আবেদীন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই তোফাজ্জল হোসেন ও এসআই বিকাশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করেন। সেই সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর অন্য দুইজনকে ধরতে ঢাকা ও গাজীপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করলেও তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম মঈনুদ্দিন জানান, হত্যা মামলার আসামি সুমনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর