• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২ সেকেন্ড পূর্বে
আরিফ জাওয়াদ
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৫ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:০৭ বিকাল

সকল স্তরের শিক্ষকদের জন্য সুষম বেতন কাঠামোসহ ইউট্যাবের ১২ দফা দাবি

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

সকল স্তরের শিক্ষকদের জন্য একটি সুষম ও মর্যাদাসম্পন্ন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।

রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার পি জে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এসব দাবি জানান।

এসময় লিখিত বক্তব্যে ইউট্যাবের সভাপতি ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, 'শিক্ষকতা পেশা: মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পৃথিবীর নানা প্রান্তে শিক্ষক সমাজের মর্যাদা ও পেশাগত অধিকার সমুন্নত রাখার প্রত্যয়ে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালন করা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সকল স্তরের শিক্ষকই পেশাগত অবমূল্যায়ন ও আর্থিক সংকটসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।

তিনি বলেন, শিক্ষার ভিত্তি তৈরির মূল দায়িত্বপালন করেন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকবৃন্দ। অথচ এই দুই স্তরের শিক্ষকদের বেতন-ভাতাদি জাতীয় বেতন স্কেলে নিম্ন স্তরে আটকে আছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ লাভ করেন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এটি সর্বনিম্ন।

ইউট্যাব সভাপতি আরও বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকগণ বেতন ও অন্যান্য পেশাগত সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তিতে চরম বৈষম্যের শিকার। দেশের মাধ্যমিক স্তরের ৯৭% শিক্ষা কার্যক্রম চলছে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর মাধ্যমে। এতে কর্মরত বিপুলসংখ্যক শিক্ষককে আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাতে হয়। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু হয়নি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে সকল বেসরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স চালু আছে, সেখানে কর্মরত শিক্ষকদের এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত করা হয়নি। এটি শিক্ষকদের প্রতি সরকারের চরম বৈষম্যমূলক নীতি।

প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষকগণ অন্যান্য সমযোগ্যতার সরকারি কর্মকর্তাদের তুলনায় কেবল আর্থিক সুযোগ-সুবিধায়ই পিছিয়ে নন, পদোন্নতি প্রক্রিয়ায়ও তারা চরম বৈষম্যের শিকার। দীর্ঘদিন একই পদে চাকুরি করেও নানা জটিলতার কারণে শিক্ষকরা সময়মত পদোন্নতি পাচ্ছেন না। এমনকি শিক্ষকদের আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতি, ডিজিটাল শিক্ষণ প্রযুক্তি ও গবেষণায় প্রশিক্ষণের সুযোগও সীমিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দেশের উচ্চশিক্ষার মূল কারিগর হলেও অন্যান্য সরকারি ক্যাডারের তুলনায় তারা আর্থিক সুবিধাদি লাভে পিছিয়ে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত গবেষণা তহবিল নেই, ফলে যোগ্য শিক্ষক ও গবেষক থাকলেও বিশ্বমানের গবেষণার সুযোগ তারা পান না। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন ক্ষুণ্ণ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মুক্তবুদ্ধি চর্চার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। এমনকি রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হয়ে শুধু পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়া নয়, অনেকে চাকরিচ্যুতও হয়েছেন।

শিক্ষা ও প্রযুক্তিনির্ভর, গবেষণামুখী ও নৈতিকভাবে সচেতন একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা টেকসই উন্নয়নের মূল শর্ত। আর একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরির মূল কারিগর হলেন শিক্ষক। কিন্তু বাংলাদেশের শিক্ষকরা আজ অর্থনৈতিক অনটন ও পেশাগত অবমূল্যায়নের কারণে হতাশ। এ অবস্থার উত্তরণে তারা ১২ দফা দাবি জানান।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- জাতি গড়ার কারিগর সকল স্তরের শিক্ষকদের জন্য একটি সুষম ও মর্যাদাসম্পন্ন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করতে হবে; শিক্ষকদের পদোন্নতি প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও যুগোপযোগী করতে হবে; শিক্ষকদের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ, গবেষণা সুযোগ ও ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে হবে; শিক্ষকদের প্রকৃত শিক্ষাদানে মনোনিবেশ করার জন্য প্রশাসনিক কাজ কমিয়ে আনতে হবে; সকল স্তরের বেসরকারি শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করতে হবে এবং অবসর গ্রহণকারী বেসরকারি শিক্ষকদের অবসর সুবিধাসহ সকল পাওনা অবিলম্বে পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে; আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র, মর্যাদাপূর্ণ ও উচ্চতর বেতন স্কেল প্রবর্তন করতে হবে।

শিক্ষকদের গবেষণার সুযোগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে গবেষণা ভাতা প্রদান করতে হবে; পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও গবেষণার মানোন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতিবছর ন্যূনতম ১টি আন্তর্জাতিক ও ১টি জাতীয় পর্যায়ে কনফারেন্স/সেমিনারে অংশগ্রহণ ও গবেষণাপত্র উপস্থাপনের জন্য ভ্রমণ ভাতাসহ অন্যান্য আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে; উন্নতমানের জার্নালে গবেষণাপত্র ও স্বীকৃত মানের গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশে উৎসাহিত করার জন্য বিশেষ প্রণোদনা দিতে হবে;

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের চাকরির নিশ্চয়তা, বেতন কাঠামো নির্ধারণ ও গবেষণা সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে মুক্তবুদ্ধি চর্চার সুযোগ অবারিতকরণসহ শিক্ষা ও গবেষণাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; শিক্ষকদের সম্মান, সামাজিক মর্যাদা ও কর্মক্ষেত্রে সকল প্রকার অনিশ্চয়তা দূর করে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউট্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম সরকার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক কামরুল আহসান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক লুৎফর রহমান, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. সোহাগ আউয়াল, ইউট্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আবদুর রশিদ, সহসভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, ইউট্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম, অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন, অধ্যাপক মেহেদী হাসান খান, অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক ড. আব্দুল করিম, অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম রুবেল প্রমুখ।

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]