
নোয়াখালী জেলাকে স্বতন্ত্র বিভাগ ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌরাস্তা জামে মসজিদ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন চত্বরে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।
এ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক কামাখ্যা চন্দ্রদাস, হেফাজত ইসলাম নোয়াখালী জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ইয়াছিন আরাফাত, চৌমুহনী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মহসিন আলম, চৌমুহনী ব্লাড ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা টিআই সুজন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব মেহেদী হাসান সীমান্ত এবং সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ তুষারসহ হাজার হাজার আন্দোলনকারী।
নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সমন্বয় কমিটি, নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদ এবং সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
নোয়াখালী জেলার প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তায় দুই ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির কারণে নোয়াখালী-ঢাকা, নোয়াখালী-কুমিল্লা, নোয়াখালী-ফেনী এবং নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুর সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা স্থায়ী এই অবরোধের ফলে ওই সময় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকে।
এ সময় বক্তারা বলেন, বৃহত্তর নোয়াখালীতে প্রায় এক কোটি মানুষের বসবাস। নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলন আজ শুধু একটি প্রশাসনিক দাবিই নয়, এটি কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন, মর্যাদার লড়াই। দীর্ঘদিন ধরে নোয়াখালীর মানুষ উন্নয়ন বঞ্চনার শিকার।
যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, শিল্পায়ন সব ক্ষেত্রেই এই অঞ্চলের মানুষ পিছিয়ে রয়েছে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তহীনতার কারণে। অথচ নোয়াখালী ঐতিহ্য, শিক্ষা, কৃষি ও বাণিজ্যে একটি সমৃদ্ধ অঞ্চল। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে নতুন বিভাগ গঠনের পর নোয়াখালীর মানুষও চেয়েছে তাদের নিজস্ব বিভাগ নোয়াখালী বিভাগ।
যার আওতায় থাকবে লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুরসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলো। এই বিভাগ গঠিত হলে প্রশাসনিক কার্যক্রম আরও দ্রুত ও সহজ হবে, সাধারণ মানুষকে আর চট্টগ্রাম বা ঢাকা যেতে হবে না ছোটখাটো কাজের জন্য। নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন শুধু নোয়াখালীর নয়, পুরো উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়ন নিশ্চিত করবে। এটি হবে উপকূলীয় সুরক্ষা, বাণিজ্যিক প্রসার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত। কিন্তু দুঃখজনক হলো, দীর্ঘদিন ধরে এই যৌক্তিক দাবি উপেক্ষিত হচ্ছে।
ফলে জনগণের ক্ষোভ ও বঞ্চনা দিন দিন বাড়ছে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ উপায়ে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নোয়াখালী বিভাগ গঠনের সিদ্ধান্ত আসুক। সরকার এই দাবিকে গুরুত্ব দিক, কারণ এটি দেশের সার্বিক উন্নয়নেরই অংশ। নোয়াখালী বিভাগ শুধু একটি দাবি নয়, এটি নোয়াখালীর মানুষের আত্মমর্যাদার প্রশ্ন, ন্যায়বিচারের প্রশ্ন, উন্নয়নের প্রশ্ন। একটি স্লোগানেই তাই আজকের দাবি “প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ চাই, নোয়াখালী বিভাগ চাই।”
বক্তারা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রাষ্ট্র যদি আঞ্চলিক স্বার্থে এর ভাষা বোঝে তবে নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন খুব বেশি দূরে নয়। কুমিল্লার সাথে নোয়াখালীবাসী বিভাগে যাবে না, নোয়াখালী বিভাগ সময়ের দাবি।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর