
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইল-বিশ্বরোড মোড়ে যানজট এখন নিত্যদিনের দৃশ্য। আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল-বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই অংশে যাত্রী ও চালকরা দীর্ঘ সময় ধরে আটকা পড়ে থাকেন।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বেহাল মহাসড়ক পরিদর্শন শেষে সড়ক ও জনপথের ১২ জন কর্মকর্তাকে সরাইল-বিশ্বরোড মোড়ে অস্থায়ী কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেন। কিন্তু আজ, বৃহস্পতিবার, কাউকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি, অফিসটিও তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল।
২০২০ সালে আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এই প্রকল্প পরিচালনা করছে। নানা জটিলতার কারণে পাঁচ বছরেও কাজ সম্পন্ন হয়নি।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ রাখায় মহাসড়কের অবস্থাও আরও খারাপ হয়ে গেছে। ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, ১২ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে সময় লাগে ৪–৬ ঘণ্টা।
এ অবস্থায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ আশুগঞ্জ গোলচত্বর ও সরাইল-বিশ্বরোড মোড়ের খানাখন্দ অস্থায়ীভাবে মেরামত কাজ শুরু করেছে। এ কাজের তদারকিতে ১২ সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে আছেন— ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক, কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের পরিচালক ও অতিরিক্ত পরিচালক, সড়ক ও জনপথ কুমিল্লা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী, মনিটরিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং প্রকল্পের প্যাকেজ-২ ও প্যাকেজ-৩ ব্যবস্থাপক।
গতকাল উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান নিজেও দুই ঘণ্টারও বেশি সময় যানজটে আটকা পড়েন। পরে মোটরসাইকেলে সরাইল-বিশ্বরোড মোড়ে পৌঁছান। পরিদর্শন শেষে তিনি ১২ সদস্যকে নির্দেশ দেন, ‘এটাই তোমাদের ক্যাম্প অফিস। ঢাকায় যাওয়ার প্রয়োজন নেই। এখান থেকে সমস্যা সমাধান করতে হবে। দায়িত্বে অবহেলা হলে বরখাস্ত করা হবে।’
তবে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, অস্থায়ী কার্যালয় তালাবদ্ধ এবং কর্মকর্তাদের কেউ উপস্থিত নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ বর্তমানে জাপানে অবস্থান করছেন।
আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল আওয়াল মোল্লা এখন টিভিকে বলেন, ‘সরাইল-বিশ্বরোড মোড়ে তেমন যানজট নেই। আমাদের সাইড অফিসে রয়েছি। সবাই প্রকল্প এলাকায় কাজ করছেন।’
এদিকে, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যানজট তৈরি হয়।
সড়ক বিভাগের সংস্কার কাজের কারণে বিশ্বরোড মোড়ের দুই পাশে দেড় কিলোমিটার এলাকায় যানজট দেখা দিয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর