
শিক্ষা হোক বা বিনোদন বর্তমানে ছোটদের স্ক্রিন টাইম (স্মার্টফোন পর্দায় কাটানো সময়) অনেক বেড়ে গেছে। মোবাইল, ল্যাপটপ বা ট্যাবলেট একদিকে যেমন পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছে, তেমনি এর কারণে শিশুদের একাগ্রতাও কমছে।
স্ক্রিন ব্যবহারের সময় তারা সহজেই অন্যমনস্ক হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে, বাবা-মায়েরা কয়েকটি সহজ বিষয় মেনে চললে এই সমস্যা অনেকটা সামাল দিতে পারেন।
কয়েকটি উপায়ে আপনার সন্তানের স্মার্টফোন আসক্তি কমাতে পারেন। দেখে নিন সেসব-
১. বই
ছোট থেকেই শিশুকে বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে তুলুন। এমনকি ছয় মাস বয়সী শিশুর উপযোগী বইও রয়েছে। কাপড়ের তৈরি এসব বই কিনে দিন শিশুকে। বড় ও রঙিন ছবিওয়ালা বই হাতে তুলে দিন ও গল্প করুন তাদের সঙ্গে। বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠলে স্ক্রিনে আসক্ত হবে না শিশু।
২. শরীরচর্চা
ছোটদের মন ভালো রাখতে এবং একাগ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে শরীরচর্চা। কিন্তু মোবাইলে আসক্ত সন্তানেরা অনেক সময়ই খেলাধুলোর প্রতি বিমুখ হয়ে ওঠে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, দিনে অন্তত ১ ঘণ্টা খেলাধুলো অল্পবয়সিদের মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক।
৩. পর্যাপ্ত ঘুম
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ৬ থেকে ১২ বছর বয়সি শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য প্রতিদিন ৯ থেকে ১২ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। কিন্তু স্ক্রিন টাইমের জন্য অনেক সময়েই তাদের পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব রয়ে যায়। রাতে নির্দিষ্ট সময়ে তাদের ঘুমের অভ্যাস তৈরি করতে পারলে স্ক্রিন টাইম কমবে। পরোক্ষে একাগ্রতা বৃদ্ধি পাবে।
৪. অভিভাবকদের নজরদারি
পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি এবং অভিভাবকদের নজরদারি ছোটদের স্ক্রিন টাইম কমাতে পারে। যেমন পড়াশোনার সময়ে মোবাইল না দেখা বা শোয়ার ঘরে ডিজিটাল পর্দা নিষিদ্ধ করার মতো ছোট ছোট নিয়ম চালু করা যায়। তার ফলে ছোটদের মস্তিষ্কের উপর চাপ কমবে। মনঃসংযোগের পরিসরও বৃদ্ধি পাবে।
৫. সামাজিক মেলামেশা
চিকিৎসকেদের মতে, সামাজিক মেলামেশা ছোটদের মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে। তাই মোবাইল ছেড়ে তারা যদি বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে খেলাধুলো বেশি করে, বা আঁকা, লেখা বা অন্যান্য শখ তৈরি করতে পারে, তাহলে বুদ্ধির বিকাশ ঘটে। একই সঙ্গে সামাজিক মেলামেশা তাদের একাগ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৬. বাড়ির কাজ করার সময় শিশুকে সঙ্গে রাখুন
রান্না করা বা ঘর গোছানোর মতো কাজগুলো করার সময় শিশুকে বলুন সাহায্য করতে। ছোট ছোট কাজ তাকে করতে দিন। নিজের খেলনাগুলো গুছিয়ে নির্দিষ্ট থানে রাখতে বলুন। এতে সে যেমন ব্যস্ত থাকবে, তেমনি নিজের কাজ নিজে করার অভ্যাস গড়ে উঠবে।
৭. বাচ্চাদের খেয়াল রাখা
পড়াশোনার বাইরে ছোটদের স্ক্রিন টাইম কমানো উচিত। অনেক সময় বাড়িতে বড়রা টিভি বা ল্যাপটপ ব্যবহার করলে ছোটরাও আকর্ষিত হয়। তার ফলে তাদের কথোপকথন এবং শব্দচয়নে সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন আসতে পারে। বিভিন্ন শিক্ষামূলক অ্যাপ এবং কার্টুনের বাইরে ছোটরা যাতে ডিজিটাল পর্দা না ব্যবহার করে তা খেয়াল রাখা উচিত।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর