
কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে ওঠা অর্ধশতাধিক দোকানপাট ও স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন। রবিবার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে অংশ নেয় জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, র্যাব, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা পুলিশের যৌথ টিম। বালিয়াড়ি দখলমুক্ত করতে ব্যবহার করা হয় একটি এক্সকাভেটরও।
এর আগে শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অংশীজনদের নিয়ে এক জরুরি বৈঠকে সৈকত এলাকা দখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সদ্য যোগদান করা জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান।
সভায় জানানো হয়, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সৈকতের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) থেকে সব ধরনের স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
সভা শেষে সিদ্ধান্ত হয়- ১১ অক্টোবর রাতের মধ্যে নতুন স্থাপনা ও ১৬ অক্টোবরের মধ্যে পুরোনো স্থাপনা সরাতে হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনেকেই স্থাপনা না সরানোয় রবিবার অভিযান চালিয়ে তা উচ্ছেদ করা হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (এডিআইজি) আপেল মাহমুদ বলেন, দুপুর ২টার মধ্যে মালিকদের স্বেচ্ছায় স্থাপনা সরানোর সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা না সরানোয় প্রশাসনের নির্দেশে অভিযান চালিয়ে অন্তত ৫০টি দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, বালিয়াড়ি দখলমুক্ত করতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা কার্যকর করা হচ্ছে। স্থাপনাগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেও না সরানোয় অভিযান চালাতে হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, গত এক বছরে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক, সুগন্ধা, কলাতলী, দরিয়ানগর, হিমছড়ি, সোনারপাড়া, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতজুড়ে শত শত টংঘর ও দোকানপাট গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে জনপ্রিয় পর্যটন স্পটগুলোতেই দখলের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
বিশেষ করে গত মাসে বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের বদলির পরপরই সুগন্ধা পয়েন্টে নতুন করে শতাধিক দোকান ও টংঘর তোলা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত প্রায় ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রসৈকতকে ১৯৯৯ সালে সরকার প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। আইন অনুযায়ী, জোয়ার-ভাটার অঞ্চল থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত কোনো স্থাপনা নির্মাণ বা উন্নয়ন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এর আগেও ২০২৩ সালের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের শুরুতে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে জেলা প্রশাসন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিল। তবে পর্যটকপ্রিয় এই সৈকতের বালিয়াড়িতে নতুন করে স্থাপনা গড়ে ওঠা প্রশাসনিক তৎপরতার স্থায়িত্ব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে পরিবেশবাদীরা।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর