রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। দাফন শেষে স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে আশপাশের পরিবেশ। কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের স্ত্রী আইরিন আক্তার পিয়া।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে রোববার গভীর রাতে নিজ গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারচর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামে তার মরদেহ পৌঁছায়।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠী এলাকার মৃত আব্দুল জলিল চোকিদারের ছেলে আবুল কালাম আজাদ। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছোট। স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান আব্দুল্লাহ (৫) ও সুরাইয়া আক্তারকে (৩) নিয়ে বসবাস করতেন নারায়ণগঞ্জের পাঠানতলি এলাকায়। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা করতেন।
পারিবারিক জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। বড় ছেলে আব্দুল্লাহ (৫) এবং ছোট মেয়ে সুরাইয়া আক্তার (৩)।
তার স্ত্রী আইরিন আক্তার পিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে গণমাধ্যমকে বলেন, আমার সন্তানরা এখনও বুঝতে পারেনি, তাদের বাবা আর ফিরবে না। ওরা বলে, ‘বাবা ঘুমাচ্ছে মা, তুমি কান্না করো না।’ আমি কীভাবে ওদের বোঝাই যে, ওদের বাবা আর কখনও জাগবে না! আবুল কালামই ছিল আমাদের একমাত্র ভরসা, এখন আমি সন্তানদের নিয়ে একেবারে দিশেহারা হয়ে গেছি।
নিহত আবুল কালামের চাচাতো ভাই আব্দুল গণি চোকদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের অবহেলার কারণে আমার ভাই মারা গেল। এখন এর দায় কে নেবে?
নড়িয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাকী দাস বলেন, আবুল কালামের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে তার জানাজা ও দাফনে অংশ নিয়েছি। আমরা সার্বক্ষণিক তার পরিবারের পাশে রয়েছি। পরিবারের লোকজন যে কোনো প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসনকে পাশে পাবে।
উল্লেখ্য, রোববার বেলা ১২টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে রাজধানী ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় যাওয়ার সময় মেট্রোরেলের বেয়ারিং প্যাড খুলে পড়লে ঘটনাস্থলেই আবুল কালামের মৃত্যু হয়। রোববার রাত ১০টায় সিদ্ধিরগঞ্জের নতুন আইলপাড়া এলাকায় বায়তুল ফালাহ্ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর