মেডিকেল কলেজ হাসাপাতলে আগত সেবাপ্রার্থী রোগী ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের হয়রানি রোধে বিশেষ অভিযান চালায় র্যাব ও প্রশাসনের যৌথ বাহিনী।
উক্ত অভিযানে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দালাল চক্রের ১০ জন সক্রিয় সদস্যকে আটক করা হয় এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়। সোমবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে অভিযান পরিচালনা করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা ও জেলা প্রশাসন। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরোজ কোরাইশি দৃপ্ত। দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় পরিচালিত অভিযানে মোট ১৪ জনকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দালালি কার্যক্রমে সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় ১০ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২০ দিন করে কারাদন্ড দেওয়া হয়। র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে-কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে ও আশপাশে কিছু অসাধু ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে দালালি করে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তারা বিভিন্নভাবে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবায় বিঘœ সৃষ্টি করছে। পরে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সেখানে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। আটককৃতরা হলেন, কুমিল্লা সদর উপজেলার কুচাইতলী এলাকার মো. সোহেল (৩০), মো. তাজুল ইসলাম (৩০), মো. নাছের (৩৬), মো. ইমন (২১), তেতৌয়ারা এলাকার মাহবুবুর রহমান (২৮), চরপাত্তি এলাকার মো. জাকির (৪৩), চাপাপুর গ্রামের মাহমুদ (৪০)। এছাড়া চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া এলাকার মো. আলাদিন (৩৪), সদর দক্ষিণ উপজেলার রাজাপাড়া এলাকার মো. অপু (৩৪) এবং ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর আজিজ ফাজিলপুর এলাকার আব্দুল আজিজ (৩৫)।
এরমধ্যে কয়েকজন হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে রোগী ধরিয়ে দেওয়া, ওষুধ সরবরাহ ও অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া বাবদ কমিশন নেওয়া ও নানা অবৈধ কর্মকান্ডে যুক্ত ছিল বলে র্যাব জানিয়েছে। অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরোজ কোরাইশি দৃপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালালচক্র সক্রিয়। র্যাবের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে জড়িতদের আটক করা হয়েছে। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দালালদের কোনো স্থান নেই। এই ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চলবে।
র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় দালালচক্র এমন পর্যায়ে পৌঁছে ছিল যে, ওয়ার্ডবয় থেকে শুরু করে অ্যাম্বুলেন্সচালক পর্যন্ত অনেকে এই চক্রের প্রভাবে ছিল। রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে এসে বিভ্রান্ত হচ্ছেন, অনেক সময় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব অনিয়ম প্রতিরোধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, রোগী ও তাদের স্বজনদের সঠিক সেবা নিশ্চিত করতে আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। হাসপাতাল এলাকায় দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে এ অভিযান কেবল শুরু, ভবিষ্যতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, অভিযানে দন্ডপ্রাপ্তদের কুমিল্লা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর