জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তর অঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, এনসিপি এখনও পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি কোন দলের সাথে জোটবদ্ধ হবে কিনা। যদি হয়- এই কমিটমেন্টের ভিত্তিতে হবে যারা আগামীর বাংলাদেশে জুলাই সনদের প্রত্যেকটি সংস্কার বাস্তবায়নে কাজ করবে। যারা আগামীর বাংলাদেশে বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করবে, যারা শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের জন্য কাজ করবে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগ বিরোধী অবস্থান এবং ভারতের আধিপত্যবাদ বিরোধী যাদের অবস্থান। ওই অবস্থান যাদের সুদৃঢ় থাকবে তাদের সাথে জোটবদ্ধ হতেও পারে এনসিপি।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে তিনি একথা বলেন। এর আগে বিকেল পাঁচটায় এনসিপির জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দর সাথে ঘরোয়া আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন সারজিস আলম। মানিকগঞ্জ শহরের সিটি ড্রিম হোটেল মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে শংকা দেখছেন কিনা এ প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে এনসিপির কোন সমস্যা নেই। কিন্তু তার পূর্বে সরকারের যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলো যেটুকু না করলেই নয়–জুলাই সনদ এর আইনগত ভিত্তি দেওয়া, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা প্রদান করা। দৃশ্যমান বিচারিক প্রক্রিয়া– একটা বড় অংশ যেন কার্যকর আমরা দেখতে পারি এই বিষয়গুলো দেখানো। একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সক্রিয়তা বজায় রেখে নিরপেক্ষ থাকবে এইটুকু যদি তারা প্রমাণ করতে পারেন তাহলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে এনসিপির কোন সমস্যা নেই।
এনসিপির প্রতীক প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, আমরা দেখব– শাপলা পেতে একটা রাজনৈতিক দলের কোন বাধা আছে কিনা। আমরা সকল স্তরে আইন নিয়ে যারা পরান, যারা প্রণয়ন করেন, আইন নিয়ে গবেষণা করেন এবং মতামত দেন আমরা তাদের সাথে কথা বলেছি শাপলা পেতে কোন আইনগত বাঁধা নেই। তালিকা অন্তর্ভুক্ত করা বাতিল করা তো তাদের (নির্বাচন কমিশন) কাজ। তারা যদি আমাদের যৌক্তিক দাবি অন্তর্ভুক্ত করতে স্বেচ্ছাচারিতামূলক আচরণ করে তাহলে আমাদেরও রাজপথ বেছে নিতে হবে তাদের মোকাবেলা করার জন্য। আমরা প্রতীক হিসেবে শাপলা অবশ্যই পাবো। শাপলা পেতে আইনগত কোন বাধা নেই। যৌক্তিক কারণেই শাপলা আমাদের দিতে হবে। শাপলা প্রতিক নিয়েই আমরা নির্বাচন করব।
এ প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরো বলেন, আমাদের স্পষ্টভাবেই মনে হচ্ছে এখানে নির্বাচন কমিশন নিশ্চয়ই কোন ব্যক্তি হোক, কোনো প্রতিষ্ঠান হোক, কোন রাজনৈতিক দল হোক তাদের দ্বারা প্রভাবিত। এবং তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের যে সত্তা, যেই স্বাধীনতা, সক্রিয়তা- তারা তা বজায় রাখতে পারছে না। তারা কোনো না কোনোভাবে বায়াস্ট হয়ে তাদের জায়গা থেকে এনসিপির সাথে বৈষম্য করছেন। অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এনসিপি এ বৈষম্য মেনে নেবে না।
এসময় এনসিপি মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী জাহিদ তালুকদারের সভাপতিত্বে ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার, মানিকগঞ্জ জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট এ এইচ এম মাহফুজ, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মুজাহিদুর রহমান মুরাদ, মাসুম খান, শফিকুল ইসলাম, গালিবুর রহমান গালিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জেলার নেতৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় সভার অভ্যন্তরীণ আলাপচারিতা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন সারজিস আলম। বক্তব্য শুরুর সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সাবেক আহ্বায়ক ওমর ফারুক সারজিস আলমের বক্তব্য থামিয়ে দেন এবং মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দকে দালাল ও জামায়াত শিবির বলে ট্যাগিং করেন। এ ঘটনায় ক্যামেরার সামনে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন সারজিস আলম। চেয়ার থেকে উঠে এসে মিনিট পাঁচেক ওই ছাত্র নেতার সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। এ সময় পরিবেশ বেশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়। পাঁচ মিনিট পর পুনরায় ক্যামেরার সামনে আসেন সারজিস আলম।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর