 
          
 
আবারও বঙ্গোপসাগরের অদূরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণাঞ্চলীয় জলসীমা থেকে মাছ শিকারে যাওয়া একটি ট্রলারসহ সাতজন বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এ ঘটনায় স্থানীয় জেলেদের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী বোট মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, টেকনাফ পৌরসভার বাসিন্দা শাওনের মালিকানাধীন একটি মাছ ধরার ট্রলার সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যায়। সকালে সেন্টমার্টিনের দক্ষিণে অবস্থানকালে হঠাৎ মিয়ানমার দিক থেকে আসা আরাকান আর্মির সদস্যরা ট্রলারটিকে ধাওয়া করে। পরে অস্ত্রের মুখে জেলেসহ ট্রলারটি আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, জেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এখন অন্য জেলেরা সাগরে নামতেও ভয় পাচ্ছে।
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্ক জানায়, গত ২৮ অক্টোবর আরাকান আর্মির উপকূলীয় নিরাপত্তা ইউনিট সমুদ্রপথে টহল জোরদার করেছে। তাদের দাবি, আরাকান রাজ্যের জলসীমা অতিক্রম করে মাছ ধরছিল কয়েকটি বাংলাদেশি ট্রলার। সেই সময় অন্তত একটি ট্রলার আটক করা হয়, যার মধ্যে বাংলাদেশের জেলেরা ছিলেন।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিব হাসান চৌধুরী বলেন, একটি ট্রলারসহ সাত জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর আমরা পেয়েছি। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ইতিমধ্যে অবহিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের মাধ্যমে ঘটনাটি নিশ্চিত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত আট মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদ ও উপকূলবর্তী জলসীমা থেকে অন্তত ৩০০ জেলেকে অপহরণ করেছে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে চলতি বছরের মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত ২০০ জেলে অপহৃত হন। বিজিবির তৎপরতায় এদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে কয়েক দফায় ফেরত আনা সম্ভব হলেও এখনও প্রায় ১০০ জেলে নিখোঁজ বা জিম্মি অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ক্রমবর্ধমান অপহরণ ও হামলার ঘটনায় উপকূলীয় এলাকার জেলে সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি বিবেচনায় সাগরে নামা বন্ধ করে দিয়েছেন।
ট্রলার মালিক সাজেদ আহমেদ বলেন, আরাকান আর্মির ভয় এখন বাস্তব। কেউ জানে না, কখন কার ট্রলার নিয়ে যাবে। প্রশাসন ও সরকারের উচিত দ্রুত কূটনৈতিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া।
মুনতাসির/সাএ
 সর্বশেষ খবর
  জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর