রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য প্রতীকের তফসিলের তালিকায় 'শাপলা কলি' যুক্ত করেছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে 'শাপলা' প্রতীক নিয়ে ৪ মাস ৯ দিন ধরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে টানাপোড়েন চলছিল ইসির। তবে শাপলাকলি যুক্ত করে ইসি সচিব বলছেন, শাপলা ও শাপলাকলি এক নয়।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা জানান ইসি সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
ইসি কোন বিধির আলোকে শাপলাকলি প্রতীক যুক্ত করে প্রতীকের তালিকা সংশোধন করল-এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, “এটা ইলেকশন কমিশন মনে করেছে যে শাপলা কলিটা রাখা যেতে পারে। এটা কোন কারোর দাবির বিষয় প্রাসঙ্গিক না। কারণ আপনারা জানেন এনসিপি তারা শাপলা প্রতীকটা চেয়েছে। শাপলা ও শাপলাকলির ভিতরে পার্থক্য আছে। এটাও আমার মনে হয় ব্যাখার অবকাশ রাখে না।”
এনসিপির চাপে প্রতীকের তফসিলে 'শাপলা কলি' যুক্ত করা হয়েছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, '“শাপলা” আর “শাপলা কলি”-র ভিতরে পার্থক্য আছে। নতুন যে প্রতীকগুলোর ভিতরে আসছে, সেখানে শাপলা কলি রাখা হয়েছে। এটা ইলেকশন কমিশন মনে করেছে যে শাপলা কলিটা রাখা যেতে পারে। এটা কারো দাবির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক বিষয় নয়।"
আখতার আহমেদ বলেন, "আমরা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফসিলটা সংশোধন করেছি। কিছু কিছু প্রতীক নিয়ে কিছু মন্তব্য আমরা শুনেছি—যেমন কেউ বলেছে, এটা রাখলে কেন, না রাখলে ভালো হতো, রাখা কি যৌক্তিক হয়েছে কিনা ইত্যাদি। এই বিবেচনায়, আগে যে ১১৫টা প্রতীক ছিল, তার থেকে আমরা ১৬টা প্রতীক বাদ দিয়ে নতুন করে প্রতীক নিয়ে ১১৯টা প্রতীক এবার শিডিউল করেছি।"
এনসিপি বলেছিল ইসি শাপলা প্রতীক যুক্ত না করে “স্বৈরাচারী আচরণ” করছে, ইসি কি মনে করেন যে “সৈরাচার আচরণ” থেকে ফিরে আসছে- এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, এটা আমার এখতিয়ারাধীন নয় এবং আমার মতামত দেওয়াটাও উচিত না। এখন আমাকে কে ভালো বলল বা খারাপ বলল….আমরা আমাদের নৈতিক দায়িত্বটা পালন করে থাকি।
ইসি ভুল সংশোধন করল কিনা ও কেন সময়ক্ষেপণ করল-জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ”আমি বারবার করে বলছি যে কিছু প্রতীক সম্পর্কে বিরূপ মতামত ও মন্তব্য এসছে। ওভার দা পিরিয়ড অফ টাইম, কোন একটা পর্যায়ে কমিশন মনে করেছে, এটা সংশোধন করলে করা যেতে পারে। সেই হিসেবে সংশোধন হয়েছে। ব্যাপারটা এখন আর তখনের নয়। কমিশন দরকার মনে করেছে, করেছে। যদি ভবিষ্যতে প্রয়োজন হয় আবার সংশোধন করবে। এটা তো কোন স্ট্যাটিক বিষয় না। কোন আইন বিধির প্রয়োজন হয় না…..এখানে নতুন করে বিতর্কের যোগ দেখছি না।”
হ্যান্ডশেকের মতো প্রতীক নতুন করে তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে, এটা বাস্তবসম্মত কিনা- জানতে চাইলে ইসি সচিব এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, “আপনি যদি বলেন, এটা কেন করা হলো, ওটা কেন করা হলো না এর জবাব তো মুশকিলের ব্যাপার। কেন এটাকে রাখা হলো না, কেন ওইটাকে রাখা হলো, এটা তো আপেক্ষিক প্রশ্ন।”
প্রতিদিন ইসিতে বিভিন্ন দল আসছে দাবি নিয়ে, এটাকে কি ইসি চাপ মনে করছেন কিনা- জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ”নির্বাচনের তিনটা মূল ধারা। একটা হচ্ছে রাজনৈতিক দল, আরেকটা ভোটার এবং নির্বাচন কমিশন নিজেই। এই তিনটা একটা আরেকটার সাথে ইন্টার্যাক্ট করতেই আসবে এবং করতে আসার অর্থই এই না যে আমরা চাপের মধ্যে আছি। এটা চিন্তা করাটা অত্যন্ত অমূলক।”
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর