আমজনতার দলের নিবন্ধনের দাবিতে সদস্য সচিব তারেক রহমানের আমরণ অনশন কর্মসূচিতে সংহতি জানাতে এসে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, তারেক রহমানের আন্দোলন সম্পূর্ণ যৌক্তিক এবং তার দলকে অবশ্যই নিবন্ধন দিতে হবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন—যে দলগুলো রাজপথে নেই, অফিস নেই, ভুয়া কমিটি দেখিয়ে নিবন্ধন পাচ্ছে, সেই দলগুলোর চেয়ে রাজপথে সক্রিয় আমজনতার দল কেন বঞ্চিত হবে?
বুধবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সামনে তারেক রহমানের আমরন অনশনের প্রতি সংহতি জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদ খাঁন বলেন, রাজপথের লড়াকু সৈনিক ভারতীয় আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে যিনি সবসময় রাজপথে লড়াই করেছেন আপনাদের পরিচিত মুখ আমজনতা দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান ভাই। তিনি প্রায় ২০ ঘন্টা ধরে নির্বাচন কমিশনের মূল ফটকের সামনে তার দলের নিবন্ধনের দাবিতে অনশন করছেন। আমরা রাজপথে তার বিভিন্ন সময় আন্দোলন সংগ্রাম দেখেছি।
তিনি বলেন, গতকাল আমরা দেখেছি তিনটি দলকে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে এনসিপি নিবন্ধন পেয়েছে, আমরা তাদেরকে শুভকামনা জানাই। কিন্তু বাকি দুটি দল কিভাবে নিবন্ধন পেয়েছে সেটি নিয়ে প্রশ্ন আছে। আমরা মনে করি নিবন্ধন পাওয়ার ক্ষেত্রে এক নম্বর শর্ত হতে হবে রাজপথের সক্রিয়তা। কিন্তু এই সক্রিয়তা বিবেচনা না করে শুধুমাত্র কমিটি দিয়েছে, বাসা-বাড়িকে অফিস হিসেবে দেখিয়ে; তারা এই ছলে বলে কৌশলে নিবন্ধন পাবে সেটি আমরা কোনভাবেই মানতে পারি না।
রাশেদ বলেন, আমরা দেখেছি ২৪ এর ডামি নির্বাচনের আগে কিভাবে বিএনএম, সুপ্রিম পার্টি সহ কয়েকটি দলকে ডিজিএফআই এর নির্দেশনায় নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে বৈঠক করে আমরা অনুরোধ জানিয়েছিলাম এই সকল ভুঁইফোড় দলকে যারা আগে ডিজিএফআই এর মাধ্যমে নিবন্ধন পেয়েছে এদের অবশই নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। তাদেরকে বাতিল করা হয়নি। উল্টো আমরা দেখলাম গণঅভ্যূত্থানের পরে রাজপথের সক্রিয় দলগুলোকে নিবন্ধন দেয়া হয়নি।
আলোচিত ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনে গড়া বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ডেসটিনি প্রায় ৪২ লাখ গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ করেছিল। সেই দলও দেখলাম নিবন্ধন পেল। আমার প্রশ্ন হলো এই দল কিভাবে নিবন্ধন পেল? ২৪ এর গণঅভ্যূত্থানের আগে আমরা এই দলকে কখনোই রাজপথে আমরা দেখি নাই। হঠাৎ করে জেল থেকে বের হলো। দল গঠন করল। কমিটি দিল। বাসাবাড়িকে অফিস হিসেবে দেখিয়ে দিল। তারা নিবন্ধন পেল। কিন্তু তারেক রহমান যাকে আপনারা সকলে চিনেন, রাজপথের জ্বালাময়ী বক্তব্য সকলে শুনেছেন, সবসময় সংগ্রাম করেছেন। তার দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়নি।
রাশেদ খাঁন বলেন, আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে তারেক রহমানের সাথে সংহতি জানানোর জন্য আমি এখানে এসেছি। এখন প্রধান নির্বাচন কমিশনের সাথে কথা বলব। তিনি (তারেক রহমান) অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। প্রায় ২০ ঘন্টার অধিক সময় তিনি পাড়ি দিয়েছেন। এখানে সারারাত তিনি শুয়েছিলেন। মশার কামড় খেয়েছেন। এইভাবে একজন রাজপথের সংগ্রামী নেতা তিনি রাস্তায় শুয়ে থাকবেন। আর নির্বাচন কমিশনার তারা কোন মন্তব্য করবেন না সেটি হতে পারে না। তাদের মন্তব্য জানার জন্য, তারা কি ভাবছেন কি করবেন সেটি জানার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে কথা বলার জন্য এই মুহূর্তে আমি যাব।
এসময় তিনি আরও বলেন, তারেক রহমান ভাইয়ের যে আন্দোলন সেই আন্দোলনের প্রতি আমার সংহতি রয়েছে। আমি মনে করি তারেক রহমান ভাই যে আন্দোলন করছে এই আন্দোলন যৌক্তিক এবং তার দল আম জনতার দলকে অবশ্যই নিবন্ধন দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, চূড়ান্ত পর্যালোচনা শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এখন দাবি-আপত্তি চেয়ে আগামীকাল পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। এরপর দাবি-আপত্তি আসলে তা নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত নিবন্ধন প্রদান করা হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর