কুমিল্লা–০৬ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে নগরীর কান্দিরপাড় পূর্বালী চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
বিগত ১৭ বছর ধরে মামলা-হামলায় নির্যাতিত বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের ব্যানারে শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকালে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এটি ধারাবাহিক কর্মসূচির ৬ষ্ঠ দিন। আয়োজকরা জানান, হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের মানবিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে স্বীকৃতি দিতে এবং তাঁর মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে এই আয়োজন।
কর্মীরা জানান, বিগত ১৭ বছর ধরে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা, হামলা, জেল, গুম ও হত্যাকাণ্ডের কারণে সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রায় ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। সেই দীর্ঘ সময়ে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং তাদের অব্যাহত সহায়তার দায়িত্ব পালন করেছেন হাজী ইয়াছিন। যেসব পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি জেল খেটেছেন, সেখানে নিজ অর্থায়নে খাবার, চিকিৎসা ও যাবতীয় খরচ পৌঁছে দিয়েছেন। এসব নেতাকর্মীর আয়োজনেই এ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
এদিকে, হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনের সূচনা হয় ০৩ নভেম্বর, সোমবার, যখন ইয়াছিনের সমর্থকরা রাতের অন্ধকারে মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরের দিন নগরীর কান্দিরপাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার অনুষ্ঠিত হয় নারীদের সমাবেশ। বৃহস্পতিবার নেতাকর্মীরা নফল রোজা ও গণ-ইফতারের আয়োজন করেন। ৭ নভেম্বর শুক্রবার জুমার নামাজের পর কুমিল্লার বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ৮ নভেম্বর, শনিবার, কান্দিরপাড় পূর্বালী চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্থানীয় নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। তারা জানান, ইয়াছিনের মানবিক অবদান ও দলের প্রতি ত্যাগকে সম্মান জানাতে এই কর্মসূচি পালন করেছেন।
সমাবেশে নেতাকর্মীরা বলেন, হাজী ইয়াছিন সবসময় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন—কোনও প্রচার ছাড়াই। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যয় করে জেলখরচ, চিকিৎসা, খাদ্যসহ বিভিন্ন খরচ তিনি বহন করেছেন। মহানগর যুবদলের নেতা মশিউর রহমান সজিব বলেন, "হাজী ইয়াছিনের ধারাবাহিক কর্মসূচি শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি মানবিক উদারতার এক অনন্য প্রদর্শনী। তিনি নিজ অর্থ, শ্রম ও সময় দিয়ে নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।"
মানসুর নিজামী নামে মহানগর যুবদল নেতা বলেন, আজও তৃণমূল নেতাকর্মীদের আশা—যে নেতা জীবনের ত্যাগ, মানবিক অবদান এবং নেতৃত্বের যোগ্যতা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত, তিনি সংসদে নির্বাচিত হয়ে মানুষের জন্য আরও বেশি কাজ করতে সক্ষম হবেন। এই আশা ও প্রার্থনা আমাদের আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে।
মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, "এই নেতা আমাদের নির্যাতিত কর্মীর পরিবারের চুলা জ্বলানোর টাকাটা নীরবে পৌঁছে দিতেন। আমরা অনেকে জানতাম না কে পাঠিয়েছে—কিন্তু সে সময়ে আমাদের জন্য একজন দেবতার মতো হাজী ইয়াছিন ছিলেন।" দলের সকল প্রোগ্রামের ব্যয়—মিলাদ, দোয়া, ব্যানার, পোস্টার বা লিফলেট—সবই নিজ অর্থে বহন করেছেন। এই মানবিক অবদান আজও তৃণমূল নেতাকর্মীদের হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলেছে। ইয়াছিন সংসদে নির্বাচিত হলে মানুষের জন্য আরও বেশি কাজ করতে সক্ষম হবেন। এ নেতার জন্য "আমরা রাজপথে বিক্ষোভ করেছি, রোজা রেখেছি, গণ-ইফতার করেছি। এবার মনোনয়ন আল্লাহর রহমতে মিলুক—এই প্রার্থনায় সর্বত্র দোয়া চলছে। সবকিছুর মালিক আল্লাহ।"
আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক সালাউদ্দিন মিন্টু বলেন, বিগত ১৭ বছরে যারা ১০শ টাকা পকেট থেকে খরচ করেননি, এলাকায় আসেননি, তারা অনেকে এখন কেন্দ্রীয় নেতা হয়েছেন। অনেকে ব্যক্তিগত সম্পর্কে মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকলে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ান। তৃণমূল নেতাকর্মীদের হৃদয়ের স্পন্দনকে বঞ্চিত করবেন না।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর