নির্বাচন কাভারেজে সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আচরণবিধির এমন সব ধারা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব জানিয়েছে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি), যা সংবাদ সংগ্রহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
সংগঠনটির দাবি, ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ, অবস্থান ও সম্প্রচার সংক্রান্ত কয়েকটি বিধান সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে অপ্রয়োজনীয় সীমাবদ্ধতা তৈরি করছে।
রোববার (৯ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব দাবি তুলে ধরে বিজেসি। বৈঠকে অংশ নেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান রেজায়োনুল হক রাজা, আরএফইডি সভাপতি কাজী জেবেলসহ প্রতিনিধিরা।
বৈঠক শেষে বিজেসি চেয়ারম্যান রেজায়োনুল হক রাজা সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচন কাভারেজে সাংবাদিকদের জন্য যে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে, সেখানে কিছু বিষয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। আমরা অংশীজন, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিকদের মতামত নিয়ে একটি সুপারিশমালা তৈরি করেছি, সেটি আজ কমিশনের হাতে তুলে দিয়েছি।”
তিনি জানান, বৈঠকে ইসির সিনিয়র সচিবসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন এবং সাংবাদিকদের প্রস্তাবগুলো বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
রেজায়োনুল হক রাজা বলেন, “ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করার বাধ্যবাধকতা সাংবাদিকদের জন্য অপ্রয়োজনীয় প্রতিবন্ধকতা। সাংবাদিকদের ইস্যুকৃত আইডি কার্ড থাকলে আলাদা অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই।”
কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট অবস্থানের সীমা নিয়েও আপত্তি জানায় বিজেসি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “কমিশন জানিয়েছে এটি কোনো কঠোর সময়সীমা নয়, বরং কেন্দ্রের জায়গার সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় সাধারণ নির্দেশনা মাত্র। আমরা বুঝেছি, এটি সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা সীমিত করার জন্য নয়।”
বৈঠকে সরাসরি সম্প্রচার নিয়েও আলোচনা হয়। রাজা বলেন, “সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল হতে হবে যেন ভোটগ্রহণে কোনো বিঘ্ন না ঘটে। তবে অনিয়ম বা কেন্দ্র দখলের মতো ঘটনা ঘটলে সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালন বাধাগ্রস্ত হওয়া ঠিক নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আশ্বস্ত যে কমিশন আন্তরিকভাবে সাংবাদিকদের সহযোগিতা করতে চায়। এমনকি কমিশনও মনে করে—সিসি ক্যামেরা না থাকলেও সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সহায়ক।”
রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) সভাপতি কাজী জেবেল বলেন, “আমরা প্রস্তাব করেছি—সাংবাদিকদের ওপর হামলা বা সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেওয়া হলে তার শাস্তির বিধান আচরণবিধিতে যুক্ত করতে হবে। যেমন রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণবিধিতে ভঙ্গের জন্য প্রার্থিতা বাতিলের ব্যবস্থা আছে, তেমনি সাংবাদিকদের ওপর হামলার ক্ষেত্রেও স্পষ্ট শাস্তিমূলক ধারা থাকা উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “নীতিমালাটি শুধু জাতীয় সংসদ নয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও প্রযোজ্য হওয়া উচিত। কারণ পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু সাংবাদিকদের দায়িত্ব এক।”
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জাতীয় এর সর্বশেষ খবর