পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৪ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন। তেঁতুলিয়া মডেল থানার পুলিশ শনিবার রাতেই অভিযুক্ত আব্দুস সোবহান (৫৭) কে আটক করেছে। আটক আব্দুস সোবহান জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের রওশনপুর এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, ৫৭ বছর বয়সী আব্দুস সোবহান বাড়িতে লোকজন না থাকার সুযোগে ওই কিশোরীকে একা পেয়ে হাত, পা ও মুখ বেঁধে জোর করে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ঘটনাটি কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সে। এতে ভয়ে ওই কিশোরী কাউকে কিছু জানায়নি। কিন্তু কিছুদিন পর ধর্ষণের কারণে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বর্তমানে সে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে এলাকাবাসী অভিযুক্ত সোবহানের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এছাড়া এলাকাবাসী ও স্থানীয়দের উদ্যোগে রবিবার বিকেলে আটক সোবহানের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, কীভাবে একজন দাদার বয়সী ব্যক্তি এমন বিবেকহীনভাবে ঘৃণ্য কাজ করতে পারে তা ভাবতেই শিউরে উঠছেন সবাই। অভিযুক্ত সোবহান এর আগেও নানা অসামাজিক কাজে জড়িত থেকে জরিমানা গুনেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি কিশোরী মেয়েদের টার্গেট করে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক অপরাধ করে আসছেন বলে দাবি স্থানীয়দের।

ভুক্তভোগী কিশোরী জানান, অভিযুক্ত সোবহান সম্পর্কে তার দাদা হন। তিনি প্রায়ই তাদের বাড়িতে আসতেন। গত ৪ এপ্রিল শুক্রবারে মা-বাবা মরিচ তুলতে মাঠে গেলে সে একা ছিল। হঠাৎ সে ঘরে ঢুকে হাত-পা বেঁধে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে কাউকে কিছু না বলতে বাধ্য করে। এখন সে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা এবং এর কঠিন বিচার চেয়েছেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বলেন, তিনি পাথর শ্রমিক। গত বৃহস্পতিবার জানতে পারেন মেয়েটা অন্তঃসত্ত্বা। তিনি খুব চিন্তায় আছেন এবং বিচার পাবেন কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। দাদার বয়সী সোবহান তার মেয়ের এমন সর্বনাশ করেছে। তিনি তার কঠিন শাস্তি চান এবং ফাঁসি না হলে এই সমাজে এ ধরনের নরপিশাচরা আরও সাহস পাবে বলে মন্তব্য করেন।

তিরনইহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। ইতোমধ্যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে এবং পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ধরনের সামাজিক অবক্ষয় রোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন।

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুসা মিয়া আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি ধর্ষণ মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত আব্দুস সোবহানকে আটক করা হয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।

কুশল/সাএ