কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সীমান্তে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর বন্দুকের নলের আঘাতে এক বাংলাদেশি নাগরিক আহত হয়েছেন।
আহত হওয়া ব্যক্তির নাম সফিক (২৯)। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
খারেরা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার আবু বক্কর সিদ্দিক ঘটনাটি নিশ্চিত করেন। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ভোরে উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের খারেরা সীমান্তের ৭০ নম্বর পিলার সংলগ্ন জিরোপয়েন্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার ভোরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ওই এলাকায় ৫-৬ জন নারী-পুরুষ মানবপাচারকারীদের সহায়তায় ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন। এসময় বিএসএফ সদস্যরা ধাওয়া দিলে অন্যরা পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও সফিক সীমান্তের ওপার জঙ্গলে লুকিয়ে থাকেন। পরে বিএসএফ সদস্যরা তাকে আটক করে বন্দুকের নল দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে আহত অবস্থায় ফেলে যায়।
পরে সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় মানবপাচারকারী মারুফ ও তার সহযোগীরা সফিককে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।সে এখন হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় চিকিৎসাধীন। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে বিএসএফের বন্দুকের আঘাতে এমন হয়েছে বলে তিরি স্বীকার করেছেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই সীমান্ত দিয়ে মানবপাচারকারীরা সক্রিয়ভাবে মানুষ ও আ'লীগের হেভিওয়েট ব্যক্তিকে পারাপার করছে। অভিযোগ রয়েছে, টাকার বিনিময়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও এই কাজে সম্পৃক্ত।
এ এলাকায় সক্রিয় মানবপাচারকারীদের মধ্যে রয়েছেন সোসলেমের ছেলে জামাল হোসেন,মতিন কাজীর ছেলে তৌফিক, মাহবুবের ছেলে আকরাম, ওহাবের ছেলে তুহিন, হোসেনের ছেলে মারুফ হোসেনসহ আরও অনেকে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মানবপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধে থানায় ও বিজিবির দপ্তরে একাধিক মামলা রয়েছে।
এদিকে, এক মাস আগে একই সীমান্তের ৭১ নম্বর পিলার সংলগ্ন এলাকা দিয়ে দুই নারী ভারতে অনুপ্রবেশের সময় মানবপাচারকারীদের নির্যাতনের শিকার হন ও তাদের সাথে থাকা স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ওই সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভারতীয় পণ্যেরও আসা-যাওয়া চলমান রয়েছে।
বাকশীমূল ইউনিয়নের সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. জামসেদ চৌধুরীসহ স্থানীয় সচেতনমহলের দাবি মানবপাচারকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মানিক মিয়া বলেন,ঘটনাটি আমরা শুনেছি, এলাকায় সবাই জানে। বিস্তারিত জানার জন্য বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
খারেরা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন,এমন একটি ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি এবং সরেজমিনে যাচাই করে এর সত্যতা পেয়েছি। মানবপাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে তদন্ত চলছে।
এ বিষয়ে থানার পুলিশ জানিয়েছে, সীমান্তে মানবপাচারকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত চলমান রয়েছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর