চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নিজস্ব রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে, তবে ভারী রেয়ার আর্থ উপাদানের ঘাটতি এখন তাদের বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নেভাডা–ভিত্তিক এমপি ম্যাটেরিয়ালসকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক সরকারি সহায়তা দিয়ে বিকল্প সরবরাহ চেইন তৈরির চেষ্টা করলেও ডিসপ্রোসিয়াম ও টার্বিয়ামের সংকট পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে।
রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, বৈদ্যুতিক গাড়ি, ইলেকট্রনিক্স এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে অপরিহার্য। চীন যখন ভারী রেয়ার আর্থের রপ্তানি সীমিত করছে, তখন পশ্চিমা দেশগুলো দ্রুত নতুন উৎস খুঁজে পাওয়ার তাগিদ অনুভব করছে। এমপি ম্যাটেরিয়ালস খনি থেকে ম্যাগনেট তৈরি পর্যন্ত সমগ্র উৎপাদন প্রক্রিয়া নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইলেও তাদের মাউন্টেন পাস খনিতে এই দুই গুরুত্বপূর্ণ পদার্থের উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে।
বিশ্লেষকদের মতে, ডিসপ্রোসিয়াম ও টার্বিয়াম ছাড়া উচ্চ তাপমাত্রায় ব্যবহৃত ম্যাগনেট তৈরি করা সম্ভব নয়। ফলে এমপি ম্যাটেরিয়ালসকে ব্রাজিল, মালয়েশিয়া বা আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর নির্ভর করতে হতে পারে, যা সময়সাপেক্ষ এবং কৌশলগত দিক থেকে চ্যালেঞ্জিং। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা কয়েকটি সম্ভাব্য সরবরাহকারীর সঙ্গে ইতোমধ্যে আলোচনা করছে। পাশাপাশি অ্যাপল থেকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য রেয়ার আর্থ সংগ্রহের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি তাদের আংশিক সহায়তা দেবে।
বেঞ্চমার্ক মিনারেল ইন্টেলিজেন্সের তথ্য বলছে, পশ্চিমারা ২০২৪ সালে ভারী রেয়ার আর্থের ৯৯ শতাংশ চীনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। ২০৩০ সালেও তা মাত্র সামান্য কমে ৯১ শতাংশে নেমে আসবে, অর্থাৎ চীনের প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া এখনও কঠিন। চীনা রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের কারণে কিছু অটোমোবাইল উৎপাদন স্থগিত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। যদিও সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র–চীন আলোচনার পর বেইজিং নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপ সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা শিল্প ভবিষ্যতে আরও বড় ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
সূত্র-রয়টার্স।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর