• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১৭ সেকেন্ড পূর্বে
প্রচ্ছদ / জাতীয় / বিস্তারিত
সম্পাদনা: সালাউদ্দিন আহমেদ
শিফট-ইন-চার্জ
প্রকাশিত : ২১ নভেম্বর, ২০২৫, ০৫:৪৩ বিকাল

কেন কিছু মানুষ ভূমিকম্প টের পান না?

প্রতীকী ছবি

‘কখন ভূমিকম্প হইছে তার কিছুই জানি না আমি’, ‘ভূমিকম্পের দেড় ঘণ্টা আগে আমি ঘুম থেকে উঠে পড়েছি আজ, কিন্তু তারপরও কিছুই অনুভব করিনি’, ‘ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে এসে দেখছি দেশে ভূমিকম্প হয়ে গেছে’-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর অনেককেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এরকম প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়।

প্রশ্ন হলো, একই সময়ে একই স্থানে থাকার পরও কেন সবাই ভূমিকম্প অনুভব করে না?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মূল কারণ সংবেদনশীলতা ও ব্যক্তির অবস্থান।

যে কারণে অনুভূতির তারতম্য:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শাখাওয়াত হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ‘আপনি কত তলায় আছেন, তার ওপর এটি নির্ভর করছে। আপনি যত উপরের দিকে থাকবেন, আপনার ঝাঁকুনিটা অনুভব করার সম্ভাবনা তত বেশি। যত নিচে থাকবেন, এটি অনুভব করার সম্ভাবনা তত কম।’

তবে এখানে আরেকটি বিষয় হলো, ‘কিছু কিছু মানুষ গতি খুব ভালো অনুভব করতে পারে।’

তার মতে, যারা ভূমিকম্প টের পায় না তাদের সেনসিটিভিটি বা সংবেদনশীলতা কম।

তিনি আরো বলেছিলেন, ‘অনেকে আছেন, যারা উচ্চতা নিতে পারেন না। ছাদ থেকে নিচে তাকাতে পারেন না। কারণ তারা উচ্চতার বিষয়ে খুবই সংবেদনশীল। মোশন বা গতির ক্ষেত্রেও তাই।’

এক্ষেত্রে কেউ কেউ সংবেদনশীল হবেন, সেটি স্বাভাবিক হলেও তার মতে, ‘ভূমিকম্পের সময় ব্যক্তি কোন অবস্থায় ছিল, তার ওপরেও তার টের পাওয়া না পাওয়া নির্ভর করে।’

শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘যিনি বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তার ভূমিকম্প টের পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কেউ যদি চলাচলের মাঝে থাকে, তার টের পাওয়ার সম্ভাবনা কম। যিনি রান্না করছেন বা দৌঁড়াচ্ছেন তিনি টের না পেলেও যিনি চুপচাপ টেবিলে বসে কাজ করছেন, তার টের পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’

বাংলাদেশ কতটা ঝুঁকিতে:

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শুক্রবার (২১শে নভেম্বর) পাঁচ দশমিক সাত মাত্রার কাছাকাছি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল ১০টা বেজে ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে এই ভূমিকম্প হয়।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বিবিসি বাংলাকে জানান নরসিংদীর মাধবদীতে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়েছে।

এর আগে গত ৭ই জানুয়ারি সারা দেশে যে ভূমিকম্প অনুভূত হয়, এর উৎপত্তিস্থল তিব্বতের শিগেৎসে শহরে। সেখান থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার দূরত্ব ৬১৮ কিলোমিটার বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

একই মাসে অর্থাৎ তেসরা জানুয়ারিও বাংলাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিলো। তবে সেটি ছিল মাঝারি মাত্রার, আজকের মতো এতটা তীব্র ছিল না।

চলতি বছরের শুরুতেই হওয়া ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলও ছিল বাংলাদেশের বাইরে।

রিখটার স্কেলে পাঁচ মাত্রার ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের হোমালিন এলাকায়, ঢাকার সাথে যার দূরত্ব ৪৮২ কিলোমিটার।

বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল উল্লেখ করে আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা বলেন, ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও বার্মা—এ তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান এবং বাংলাদেশের ভেতরে ও বাইরে বড় বড় ফল্ট আছে।

মূলত, পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ট আলাদা আলাদা বিট বা প্লেট টেকটোনিক দিয়ে তৈরি হয়েছে যা নিচের নরম পদার্থের ওপরে ভাসছে। সারা পৃথিবীতে এরকম বড় সাতটি প্লেট এবং অসংখ্য ছোট ছোট সাব-প্লেট রয়েছে। এগুলো যখন সরে যায় বা নড়াচড়া করতে থাকে বা একটি অন্যদিকে ধাক্কা দিতে থাকে, তখন ভূ-তত্ত্বের মাঝে ইলাস্টিক এনার্জি শক্তি সঞ্চিত হতে থাকে।

সেটা যখন শিলার ধারণ ক্ষমতার পেরিয়ে যায়, তখন সেই শক্তি কোনো বিদ্যমান বা নতুন ফাটল দিয়ে বেরিয়ে আসে। তখন ভূ-পৃষ্টে কম্পন তৈরি হয়, সেটাই হচ্ছে ভূমিকম্প।

যেসব স্থানে একটি প্লেট এসে আরেকটি প্লেটের কাছাকাছি মিশেছে বা ধাক্কা দিচ্ছে বা ফাটলের তৈরি হয়েছে, সেটাকে বলা হয় ফল্ট লাইন।

বাংলাদেশ অঞ্চলে ভূমিকম্পের অন্যতম উৎস হলো ডাউকি ফল্ট, যেটি শেরপুর থেকে শুরু জাফলং হয়ে ভারতের করিমগঞ্জ থেকে বিস্তৃত।

আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা বলেছিলেন, ‘এসব কারণে বাংলাদেশ খুবই ভূমিকম্পপ্রবণ। তাই ভূমিকম্প অনুভব করার জন্য যে নিজের দেশেই উৎপত্তি হতে হবে, এমন না। এর প্রমাণ তো এবার পাওয়াই গেল। ৬১৮ কিলোমিটার দূরের ভূমিকম্পে বাংলাদেশে ভালোই ঝাঁকুনি খেয়েছে। মিয়ানমারের পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্পও ঢাকার মানুষ টের পাচ্ছে। ওইসব এলাকার বড় ভূমিকম্প আমাদের জন্য হুমকির।’

তার মতে, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, চীন, ভারত, নেপালের অবস্থান ওই তিন ফল্ট লাইনের আশেপাশে।

তিনি জানান, ‘তাই, মিয়ানমারের পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্প আমরা অনুভব করি। আর যদি সেখানে সাত মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তখন আমাদের ওপর সেই প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা আছে। আর ভারত বা নেপালে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে ওই সম্ভাবনা আরও বেশি।’

যদিও সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শাখাওয়াত হোসেনের মতে, ‘আমাদের দেশ জাপানের মতো ভূমিকম্পপ্রবণ না। আমরা মডারেটলি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। কিন্তু সেই অনুযায়ী আমাদের তো প্রস্তুতি নাই। আমাদের বিল্ডিং কোড মানা হয় না।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]