ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) চালু হচ্ছে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে। সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপে সাধারণ গ্রাহকদের মনে স্বস্তি ফিরলেও, মোবাইল চোর ও ছিনতাইকারী চক্রের মাথায় হাত পড়েছে।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিস্টেম চালু হলে চুরি করা মোবাইল ফোন বিক্রি করা বা ব্যবহার করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে। লাখ টাকার আইফোন বা দামি অ্যান্ড্রয়েড ফোন চুরি করলেও তা চোরের কাছে এটি খেলনা বা কাচের টুকরো ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।
কেন চোরদের দিন শেষ? বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, এনইআইআর (NEIR) সিস্টেমটি সরাসরি মোবাইল অপারেটরদের নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে।
১) নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্নকরণ: কোনো ফোন চুরি হলে বা হারিয়ে গেলে, প্রকৃত মালিক বিটিআরসি বা সংশ্লিষ্ট পোর্টালে অভিযোগ জানিয়ে ফোনটি লক করে দিতে পারবেন। লক করার পর ওই ফোনে অন্য কোনো সিম (SIM) ঢোকানো হলেও তা আর নেটওয়ার্ক পাবে না।
২) বিক্রির অযোগ্য: যেহেতু ফোনটিতে কোনো সিম কাজ করবে না এবং আইএমইআই (IMEI) ব্ল্যাকলিস্টেড থাকবে, তাই এই ফোন বাজারে বিক্রি করাও অসম্ভব হবে। কেউ এটি কিনবে না।
৩) সহজ ট্র্যাকিং: চোর যদি ফোনটি চালু করার চেষ্টা করে, তবে এনইআইআর প্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব হবে, যা পুলিশকে ফোন উদ্ধারে সহায়তা করবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা জানান, 'বর্তমানে মোবাইল চুরির পর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বা ফ্লাশ করে চোরেরা ফোন বিক্রি করে দেয়। কিন্তু এনইআইআর চালু হলে হার্ডওয়্যার লেভেলে আইএমইআই ম্যাচিং করা হবে। ফলে চোরদের এই কারসাজি আর খাটবে না। আমরা আশা করছি, এটি চালু হলে দেশে মোবাইল চুরির হার ৯০ শতাংশ কমে যাবে।'
গ্রে মার্কেটেরও আতঙ্ক: শুধু ছিঁচকে চোর নয়, এনইআইআর চালুর খবরে আতঙ্কিত গ্রে-মাফিয়া বা অবৈধ ফোন ব্যবসায়ীরাও। কারণ, যেসব ফোন অবৈধভাবে দেশে আনা হয়েছে বা শুল্ক দেওয়া হয়নি, সেগুলোও এই সিস্টেমে নিবন্ধিত না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
চুরি করা ফোন এবং অবৈধ ফোনের বাজার বন্ধ করতে এই উদ্যোগকে দেশের প্রযুক্তি খাতের জন্য একটি গেম চেঞ্জার হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। ১৬ ডিসেম্বর থেকে গ্রাহকরা তাদের শখের স্মার্টফোনটি নিয়ে আরও নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর সর্বশেষ খবর