সরকারি তিতুমীর কলেজে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকেরা। এ সময় তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক তাওসিফ মাইমুন এবং সমিতির বর্তমান সদস্যদের উপর আক্রমণ করে ছাত্রদল কর্মীরা।
শনিবার (২২ নভেম্বর) রাত ১১:৩০ টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে এই হামলা হয়।
জানা যায়, শনিবার (২৪–২৫)সেশনের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে কলেজের বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার টানায় শাখা ছাত্রশিবির৷ শিবিরের অভিযোগ, তাদের টানানো ব্যানার ছাত্রদল ছিড়ে ফেলে।
এই ঘটনায় পুনরায় ব্যানার টানাতে ক্যাম্পাসে যায় শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা ৷ এসময় ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় পেশাগত দায়িত্ব পালনে হামলার শিকার তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও ডেইলি ক্যাম্পাসের কলেজ প্রতিনিধি মোঃ আল আমিনকে রক্ষা করতে গিয়ে সমিতির সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের রিপোর্টার তাওসিফ মাইমুন হামলার শিকার হন। এসময় সাংবাদিক সমিতির সহযোগী সদস্য মো: সাদিকুল ইসলামকে মারধর করে কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হামলায় আহত সাংবাদিকরা জানান, সাংবাদিকদের উপর হামলায় জড়িতরা কলের শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক ইমাম হোসেন, সদস্য সচিব সেলিম রেজা ও যুগ্ম আহবায়ক আরিফ মোল্লার অনুসারী।
হামলার নেতৃত্ব দেয়া হারুন আর রশিদ, আতিক জলিল, মো, আল-আমিন, হল শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, রকনুজ্জান,
এ বিষয়ে সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি তাওসিফ মাইমুন বলেন, সংঘর্ষের সময় সংবাদ সংগ্রহের জন্য আমি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা হঠাৎ করেই আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এরপর তারা সমিতির অন্যান্য সদস্যদের ওপরও হামলা শুরু করলে তাদের রক্ষা করতে এগিয়ে যাই। তখনই আমার মাথায় লাঠি দিয়ে জোরালো আঘাত করা হয় এবং আমাকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
তিনি বলেন,পরে কলেজের ছাত্রী নিবাসের গেটের সামনে থেকে আমাকে টেনে-হিঁচড়ে ক্যাম্পাসের মাঠে নিয়ে গিয়ে আবারও মারধর করা হয়। ওই সময় তারা আমার মানিব্যাগ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
সাংবাদিক সমিতির সদস্য মো. আল আমিন বলেন, সংবাদ সংগ্রহের জন্য সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করে ‘সাংবাদিকতা করছিস? সাংবাদিকতা বন্ধ করে দেবো। এরপর তারা আমাকে মারধর শুরু করে। আমি দৌড়ে কলেজ মাঠের দিকে গেলে সেখানেও তারা লাঠি দিয়ে আমার পায়ে আঘাত করে।
মোঃ সাদিকুল ইসলাম বলেন, আজ ছাত্রদল - ছাত্রশিবিরের মারামারির ভিডিও ধারণ করতে গেলে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আমার ফোন কেড়ে নিয়ে যায়। এরপর আনুমানিক ২০ জন মিলে আমাকে অন্ধকারে নিয়ে যায়। সেখানে তারা লাঠি দিয়ে ইচ্ছেমতো মারধর করে এবং আমার ফোনের ভিডিওগুলো মুছে দেয়।
হামলার বিষয় জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজের আহবায়ক ইমাম হোসেন বলেন, শিবিরের পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। শিবির ছাত্রদলের তর্কাতর্কির মধ্যে তাওসিফ শিবিরের সাপোর্ট টেনেছে। আমি এখনো বিস্তারিত জানতে পারেনি৷ কোন কোরামের পোলাপান ছিল তাও জানি না।
এই বিষয়ে কথা বলার জন্য ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সাথে মুঠো ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর