কক্সবাজারের চকরিয়ায় জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে ভাতিজার লাথির আঘাতে মোহাম্মদ কালু (৮৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় অভিযুক্ত ভাতিজা আলী আহমদকে পুলিশ আটক করলে ক্ষুব্ধ স্বজনেরা তাকে পুলিশের ভ্যান থেকে টেনে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। হামলার শিকার হন আলীর স্ত্রী পারভীন আক্তার বানুও।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সোয়া ১২টার মধ্যে উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের পুলেরছড়া এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, 'সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মোহাম্মদ কালু তার ছেলেদের নিয়ে বিরোধীয় জমিতে চাষ করতে যান। এ সময় ভাতিজা আলী আহমদ সেখানে এসে বৃদ্ধ কালুর বুকে দু’বার লাথি মারেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। দ্রুত ইউনিয়ন ক্লিনিকে নেওয়া হলে চিকিৎসক মোহাম্মদ হাসান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।'
ঘটনার খবর পেয়ে চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাসসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। ওসি তৌহিদুল বলেন, ‘আলী আহমদকে কয়েক শ মানুষ ঘেরাও করেছিলেন। পরে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে থানায় নেওয়ার ব্যবস্থা করি।’
মারধরে আহত হওয়ায় আলীর স্ত্রী পারভীন আক্তার বানুকেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত কালুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
নিহত কালুর ছেলে সরওয়ার আলম ও মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, 'তিন কানি (১২০ শতক) জমি বিগত ২০ বছর ধরে জালিয়াতির মাধ্যমে ভোগ করে আসছিলেন তাদের জ্যাটাতো ভাই আলী আহমদ। সম্প্রতি আদালতের রায়ে এর এক কানি (৪০ শতক) তাদের অনুকূলে আসে। এরপরও জমি বুঝিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান আলী আহমদ। বারবার সালিশি বৈঠকের প্রস্তাব দিলেও তিনি রাজি হননি।'
তাদের ভাষ্য, বুধবার সকালে তাদের বাবা জমিতে চাষে যাওয়ার কথা বললে তারা ভেবেছিলেন, হয়তো এভাবে আলী আপোসে বসবেন। কিন্তু জমিতে পৌঁছানোর পরই আলী দৌড়ে এসে বৃদ্ধ কালুর বুকে লাথি মারেন। সঙ্গে সঙ্গে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে দেখা যায়, সকাল থেকে এলাকাজুড়ে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। পুলিশের উপস্থিতিতেই আলী আহমদকে ভ্যানে তোলার মুহূর্তে নিহত কালুর আত্মীয় নারীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে টেনে নামিয়ে বেদম মারধর করেন। ইটের আঘাতে তার মাথায় গুরুতর জখম হয়। স্বামীকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে পারভীন আক্তার বানুকেও লাঞ্ছিত করা হয়।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ক্ষুব্ধ স্বজনেরা আলী আহমদের ঘরে ঢুকে আসবাবপত্র ও ঘেরা-বেড়ায় ভাঙচুর চালান। পরে নিহত কালুর ছেলেরা আত্মীয়দের সরে যেতে অনুরোধ করলে উত্তেজনা কমে আসে।
দুপুর ২টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে চকরিয়া থানা পুলিশ।
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর