বাংলাদেশে নতুন এক সক্রিয় ভূগর্ভস্থ ফাটলরেখা চিহ্নিত হয়েছে। এই ফাটলরেখা জামালপুর ও ময়মনসিংহ থেকে ভারতের কলকাতা পর্যন্ত বিস্তৃত, দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। আন্তর্জাতিক গবেষকদের মতে, এর একটি অংশ ভূমিকম্পপ্রবণ এবং সর্বোচ্চ ৬ মাত্রার ভূমিকম্প তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আক্তারুল আহসানের নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণায় এই ফাটলরেখা শনাক্ত হয়েছে। গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, তুরস্ক ও বাংলাদেশের গবেষকরা অংশ নেন। আক্তারুল আহসান জানিয়েছেন, গবেষণার বিস্তারিত ফলাফল ১৪-১৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানায় আন্তর্জাতিক জিওফিজিক্যাল সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।
গবেষণায় ফাটলরেখাটি তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ভাগে স্বল্প মাত্রার, অন্যটিতে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে। তবে কোন অংশে ঝুঁকি বেশি বা কম, তা এখনই প্রকাশ করা হয়নি। গবেষণাটি শিগগিরই একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হবে।
সম্প্রতি ২১ ও ২২ নভেম্বর বাংলাদেশে দুই দিনে চার দফা ভূমিকম্প হয়েছে। ২১ নভেম্বরের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৭, এতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন ফাটলরেখার সঙ্গে বড় মাত্রার কয়েকটি ভূমিকম্প এবং ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ পরিবর্তনের সম্পর্ক রয়েছে। ফাটলরেখার জন্ম ৫ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে এবং পরে দীর্ঘ সময় নিষ্ক্রিয় থাকার পর পুনরায় সক্রিয় হয়েছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ইন্ডিয়ান প্লেট প্রতিবছর প্রায় ৪.৬ সেন্টিমিটার করে ইউরেশিয়ান প্লেটের নিচে ঢুকছে। এই গতির কারণে বেঙ্গল বেসিনে আরও অনেক ফাটলরেখা সৃষ্টি হয়েছে, যার মধ্যে কিছু ভূমিকম্প সৃষ্টির ক্ষমতা রাখে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আশরাফুল আলম জানান, এ অঞ্চলে আরও নতুন ফাটলরেখার সন্ধান পাওয়া সম্ভব। তবে ফাটলরেখা থাকা মানেই সর্বদা উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প হবে, তা নয়।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
জাতীয় এর সর্বশেষ খবর