গত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়ে দেশের অনেক কলকারখানা, বিশেষ করে চিনিকলগুলো একে একে বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা সেগুলো পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে কিছু মিল আবার চালু করা হয়েছে। উপরোক্ত এ মন্তব্য করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ২০২৫-২৬ মৌসুমের ৮৮তম আখ মাড়াই উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। ক্যান কেরিয়ার (ডোঙ্গা) আখ নিক্ষেপের মাধ্যমে ২০২৫-২৬ মৌসুমের আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হয়। এর আগে মিলের ক্যান ক্যারিয়ার (ডোঙ্গা) প্রাঙ্গনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রশিদুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল হক। এসময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান।
শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, চিনিকলটির আধুনিকায়ন এবং আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপনের বিএমআরআই প্রকল্পটি অচিরেই কার্যক্রম শুরু করবে। আমি আশা করেছিলাম আজই বিএমআরআই চালু হবে। পরে জানলাম, কিছু কাজ বাকি আছে। তবে কর্তৃপক্ষ আমাকে আশ্বস্ত করেছে অচিরেই এটি কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনা হবে। খুব দ্রুত আমরা প্রকল্পটি চালু করবো।
শিল্প উপদেষ্টা বলেন, আখচাষি, কৃষক এবং অস্থায়ী শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান এবং উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে বাস্তবসম্মত পাঁচ বছরের রোডম্যাপ হাতে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা শুধু মিল চালু রাখাই নয়, বরং উৎপাদন বৃদ্ধি, আধুনিকায়ন, শ্রমিকদের অধিকার এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। সব মিলিয়ে চিনি শিল্পকে আরও টেকসই ও লাভজনক করার দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি সুত্রে জানা গেছে, ২০২৫-২৬ মৌসুমে মাড়াই দিবস ধরা হয়েছে ৬৯ দিন। এই মৌসুমে ৭৬ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করার মাধ্যমে ৪ হাজার ২৫৬ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে মিল কর্তৃপক্ষ। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে ৫.০৬ শতাংশ। গত ২০২৪-২৫ মৌসুমে মিল ৬৫ কার্যদিবসে ৭১ হাজার ২৩৫ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৩ হাজার ৬৮৫ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনে সক্ষম হয়েছিল। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ২০০ মেট্রিক টন।
প্রসঙ্গ, দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চিনিকলে প্রায় ৬২ কোটি টাকা লোকসান সত্ত্বেও ডিস্টিলারিতে ১৯০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে। এতে চিনি শিল্পের লোকসান সমন্বয় করে মিলের মোট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১২৮ কোটি টাকা।
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর
জাতীয় এর সর্বশেষ খবর