গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় নির্মম ও নৃশংস এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার নাগরী ইউনিয়নে মো. মনির মোল্লা (৫২) নামের এক কৃষককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকারীরা এতটাই হিংস্র ছিল যে, তারা মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভুক্তভোগীর শরীর থেকে দুটি পা-ই বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
শনিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর নাগরী ইউনিয়নের পারাবর্তা এলাকার বন বিভাগের একটি খোলা জায়গা থেকে নিহতের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত মনির মোল্লা ওই এলাকার মৃত হাশেম মোল্লার ছেলে এবং পেশায় একজন কৃষক ছিলেন।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকালে কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশরাফুল ইসলাম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যার দিকে পারাবর্তা এলাকার বন বিভাগের নির্জন খোলা জায়গায় একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে উলুখোলা পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহটি উদ্ধার করেন। এ সময় উপস্থিত স্থানীয় লোকজন মরদেহটি কৃষক মনির মোল্লার বলে শনাক্ত করেন।
সুরতহাল প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নিহতের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিশেষ করে তার দুটি পা শরীর থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, দুর্বৃত্তরা মনির মোল্লাকে কৌশলে অথবা জোরপূর্বক ওই নির্জন স্থানে নিয়ে আসে। এরপর সেখানে প্রথমে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয় এবং পরবর্তীতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই পা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা নিশ্চিত করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর হত্যাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে, একইসঙ্গে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ ও আতঙ্ক। স্থানীয়রা অবিলম্বে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশরাফুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে। নিহতের দুই পা কেটে ফেলার বিষয়টি অত্যন্ত মর্মান্তিক। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি, তবে পুলিশ অপরাধীদের শনাক্ত করতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। খুব শীঘ্রই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল এবং মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুলিশ ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে তদন্ত কাজ অব্যাহত রেখেছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর