• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১ মিনিট পূর্বে
প্রচ্ছদ / জাতীয় / বিস্তারিত
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৫০ রাত

ডিজির সঙ্গে তর্কের কারণ জানালেন সেই চিকিৎসক

ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবু জাফরের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মণ। ঘটনার পর ডিজি তাকে তাৎক্ষণিক বরখাস্তের নির্দেশ দেন। তবে রোববার বিকেল পর্যন্ত এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা প্রকাশ করেনি।

অন্যদিকে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস জানান, ডিজির প্রতি অসদাচরণের অভিযোগে ডা. ধনদেবকে বর্তমান দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং তাকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে মহাপরিচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ানোর কারণ জানতে চাইলে ওই চিকিৎসক জানান, গত ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে আমি এখানে দায়িত্বে আছি। এ পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা, রোগী বা স্বজনদের সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার করা অথবা কেউ কারো সঙ্গে মিসবিহেভ করেছেন, যে কারণে ক্যাজুয়ালটিতে ভাঙচুর হয়েছে- এমন কোনো ঘটনা আদৌ ঘটেনি। আমরা সবসময় মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকি যে কোনো দুর্ঘটনা যেন না ঘটে।

ডা. ধনদেব চন্দ্র বর্মণ বলেন, আমি খুব সুষ্ঠুভাবেই ক্যাজুয়ালিটি বিভাগ পরিচালনা করছি। আমাদের পরিচালক, সহকারী পরিচালক ও ডেপুটি ডিরেক্টর সাহেবের তত্ত্বাবধানে আমরা খুব সুন্দরভাবেই চালাচ্ছি। ঘটনার দিন ডিজির কাছ থেকে গুরুজনের মতো ব্যবহার আশা করেছিলাম; কিন্তু তিনি এসে কী কী সমস্যা, সেগুলো জানতে না চেয়ে ভেতরে কেন টেবিল, এটা-সেটা নিয়ে নানাভাবে কথা বলেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি তিনবার উনাকে নাম বলার পরেও উনি আমাকে নানাভাবে সবার উপস্থিতিতে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যভাবে কথা বলেছেন। অথচ আমার চাকরি বেশিদিন আর নাই। এক বছর পরেই আমি পিআরএলে চলে যাব।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমি সিনিয়র, ২০১৩ সালে আমি এমএস করেছি। আমাকে ২০২৫ সালে সহকারী অধ্যাপক বানাইল। আমি জেনারেল সার্জারিতে অপারেশন থিয়েটারে আছি। হাসপাতালের ভেতরে কোনো অপারেশন করার এখনো আমার সৌভাগ্য হয়নি বা দুর্ভাগ্যও হয়নি। যেটাই হোক, এই যে প্রেক্ষাপট এটার জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষ এবং কর্তৃপক্ষের অবহেলা। আমাদের ম্যানপাওয়ারগুলো আমরা কাজে লাগাইতে ব্যর্থ। আমাদের সঠিক লোককে সঠিক জায়গায় কাজে আমরা দিতে পারি না।

তিনি বলেন, আমার গাইনি ডিপার্টমেন্টের ডাক্তার এখানে আবার জেনারেল আছে। তার উচিত গাইনি ডিপার্টমেন্টে কাজ করা। আসলে কী বলব স্বাস্থ্য সেবাটা পুরাটাই একটা উদ্ভট উটের পিঠে চলতেছে। এ রকম মনে হয় আমার কাছে। হ্যাঁ, আমি সাব-সেন্টার থেকে এ পর্যন্ত উঠে আসছি।

ডা. ধনদেব চন্দ্র বর্মণ বলেন, সাব-সেন্টারে দেখি ওষুধপত্র চুরি হয়ে যায়। হাসপাতালগুলোতে অব্যবস্থাপনা, সব জায়গায় দুর্নীতি। এসব চিন্তা-ভাবনা করে আমার আসলে কাজ করার আর মানসিকতাই নাই। আমি সাসপেনশন চাই। আমি সরকারি চাকরি করতে চাই না। এদের চালানোর মতো মনমানসিকতা নাই। স্বাস্থ্য সেবাটা পুরাটাই একটা উদ্ভটভাবে চলতেছে। আর স্বাস্থ্য দ্বারা যারা রাজনীতি করে, পলিটিক্স করে, তারাও পলিটিক্সের সময় আসে খোঁজ নেয়। এজন্য আমি খুব ত্যক্ত-বিরক্ত। ডিজি মহোদয়কে আমি গুরুজনের মতো মনে করছিলাম যে আমাদের গাইডলাইন দেবে। উনি এসে বলেন- এটা কী, সেটা কী, টুল কেন নাই, এই নাই, সেই নাই। উনি এসে বলতো আপনার কী কী দরকার, যাতে আপগ্রেডভাবে কাজটা করতে পারি; কিন্তু সেটা না করে উল্টো পরিকল্পিতভাবে ধমক। এটা কাম্য নয়।

তিনি বলেন, আমি প্রতিদিন আসি, দিন-রাত পরিশ্রম করি। কোনো সমস্যা হলে রাত ৩টা-৪টা নাই ছুটে আসি। এগুলোর কোনো মূল্যায়ন হয় না। উনি বায়োমেট্রিক নিয়ে চিন্তা করে, বায়োমেট্রিক দিয়ে আমাদের কী হবে- ২৪ ঘণ্টাই আমরা আসি। ২৪ ঘণ্টায় আমরা রিলেটেড থাকি।

তিনি আবেগজড়িত কন্ঠে বলেন, এখন আমার চাকরি শেষের দিকে, আজকে আমার ফ্রেন্ড সবাই প্রফেসর হয়ে গেছে বিভিন্ন সেক্টরে। আমার বিভিন্ন কারণে হয়নি, ট্রেনিং পোস্ট পাইতে পাঁচ বছর দেরি করতে হইছে আমাকে। ডিজি অফিসের ডিজি দেখায়, রাজনৈতিক নেতাকে ধরেন। নেতাকে ধরে ট্রেনিং পোস্ট নেন। এ ধরনের কথাবার্তা ডিজি অফিস থেকে শুনতে হয়। সবকিছু মিলিয়ে আমি স্বাস্থ্য সেবাটাকে মনে করি যে উদ্ভট উটের পিঠে চলতেছে। এতসব কারণে আমার চাকরি সাসপেনশন হলে আমি খুশি হব।

শনিবার সকালে শিশুদের মূত্রাশয় ও প্রজননতন্ত্র সম্পর্কিত রোগের চিকিৎসা বিষয়ক চলমান চিকিৎসার সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে একটি সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর।

সেমিনারে অংশগ্রহণের পূর্বে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। এ সময় তিনি সেবার মান, জরুরি বিভাগ পরিচালনা, রোগী ব্যবস্থাপনা ও স্টাফদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

তখন ক্যাজুয়ালিটি ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মণ তার বিভাগের সীমাবদ্ধতা, জনবল সংকট এবং দায়িত্ব পালনের চাপে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এতে চিকিৎসকের ক্ষোভের ভাষায় কথা বলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ক্ষিপ্ত হন। এ সময় উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।

একপর্যায়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর ডা. ধনদেব বর্মণকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, ক্যাজুয়ালটি বিভাগের ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মণ ঠাণ্ডা প্রকৃতির মানুষ। সেবার মান নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে ডা. ধনদেব বর্মণের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে; যা মোটেও ঠিক হয়নি। ডা. ধনদেব বর্মণ এরকম আচরণ করবে সেটা ধারণাও করতে পারিনি। ঘটনার পর ওই চিকিৎসককে বর্তমান দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং ডিজির সঙ্গে অসদাচরণের জন্য তাকে শোকজ করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শোকজের জবাব পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]