শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের পুর্ব গুগড়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা তিন কন্যা সন্তানের জনক মোহাম্মদ আলী ওরফে মিস্টারের তিন বছর বয়সী তৃতীয় কন্যা সন্তান আয়শা সিদ্দিকার হার্টের ছিদ্র ও তার বাল্বেরও সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
ডাক্তার বলেছেন ফুটফুটে এই কন্যা শিশুটিকে বাঁচাতে হলে আগামী ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যেই অপারেশন করতে হবে। আর এই জটিল অপারেশনের জন্য খরচ লাগবে প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। দরিদ্র অসহায় অটোরিকশা চালক মোহাম্মদ আলী এতো টাকা কিভাবে জোগাড় করবেন এ নিয়ে তিনি মহা চিন্তায় পড়েছেন।
শিশু আয়শার বাবা মোহাম্মদ আলী জানান, জন্মের ৬ মাস বয়সে শিশু আয়শার প্রচুর মাথা ঘামতে থাকে। একপর্যায়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য আয়শাকে ময়মনসিংহ পাঠায়। সেখানে বেসরকারি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা নীরিক্ষা করানোর পর ডাক্তার বুঝতে পারেন আয়শার হার্টে ছিদ্র আছে ও তার বাল্বের সমস্যাও আছে। পরে তারা আয়শাকে ঢাকার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন।
সেখানে নিয়ে গেলে আরো কয়েক প্রকার পরীক্ষা নীরিক্ষা করানোর পর দায়িত্বরত চিকিৎসক বলেন আয়শাকে সুস্থ করে তুলতে হলে আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের মধ্যেই হার্টের অপারেশন করতে হবে। এতে খরচ হবে প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা।
তিনি আরো জানান, নিজের বসত-ভিটা ছাড়া আবাদি কোন জমিজমা নেই। শুধুমাত্র অটোরিকশা চালিয়ে স্বামী স্ত্রীসহ তিন কন্যা সন্তানের ভরনপোষণ করেন। এখন ফুটফুটে আয়শার জীবন বাঁচাতে মোটা অংকের টাকা কিভাবে জোগাড় করবেন ? এরইমধ্যে বড় মেয়ে আমেনা সপ্তম শ্রেণীতে ও মেঝো মেয়ে আফসানা জান্নাত দ্বিতীয় শ্রেণীতে লেখাপড়া করছে। সব মিলিয়ে তিনি এখন হতাশায় পড়েছেন ছোট মেয়ে আয়শা সিদ্দিকার চিকিৎসা খরচের টাকার যোগান নিয়ে।
তিনি বলেন, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা কোন স্বহৃদয়বান ব্যক্তি যদি চিকিৎসা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন তাহলে হয়তো আমার শিশু কন্যা আয়শার মুখে হাসি ফুটানো যেত। আয়শার মা সুমা আক্তার বলেন, শিশু আয়শার যখন শারিরীক সমস্যা বেশি হয়ে যায় তখন তার শরীর নীল বর্ণ হয়ে যায়। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এমনকি শরীর শুকিয়ে যায়। অসুখ বেড়ে গেলে শিশু আয়শা কচি কন্ঠে চিৎকার করে বলে ‘আল্লাহ আমারে বাচাঁও। আমার কষ্ট হয়।’ তখন আমার বুক ফুটে চিৎকার আসে।
আমি মা হয়ে সহ্য করতে পারি না। ডাক্তার বলেছেন অসুস্থ এই মেয়েটিকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে। কিন্তু অভাব অনটনের সংসারে মেয়েটিকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে পারি না। বিধাতা আমাকে এতো অসহায় করে সৃষ্টি করেছেন যে, তিনজনই কন্যা সন্তান দান করেছেন। আবার তিনজনই সিজারে জন্ম গ্রহন করেছে। একদিকে অভাবের সংসার। আরেক দিকে অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা খরচ জোগাড় করতে পারছি না। তাছাড়া এই অসুস্থ শিশুকে বাড়িতে রেখে অন্যের বাড়িতে গিয়ে ঝি এর কাজও করতে পারি না। কারন অসুস্থ মেয়ে কখন কি যে হয়ে যায়। যদি কোন দেশি বা প্রবাসী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আমার শিশু বাচ্চার প্রাণ বাঁচাতে আর্থিক সহযোগিতা করতেন তাহলে আমরা তার কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকতাম।
তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ডাক্তার বলেছেন আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যেই আয়শাকে অপারেশন করাতে হবে। তা না হলে হয়তো তাকে বাঁচানো সম্ভব নাও হতে পারে।
নালিতাবাড়ী উপজেলার সংশ্লিষ্ট ১২নং কলসপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ জানান, ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল থেকে দরিদ্র অসহায় অটোরিকশা চালক মোহাম্মদ আলী মিস্টারের শিশু কন্যার চিকিৎসার জন্য যথা সম্ভব আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।
তবে তিনি বলেন, শিশু আয়শার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। এতো টাকা এই গরীব দুঃখী পরিবার জোগাড় করতে পারবে না। তাই সমাজের দানশীল, বিত্তবান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সবাই একযোগে আর্থিক সহযোগিতা করলে শিশুটির জীবন বাঁচানো সম্ভব হতো।
এদিকে, অসুস্থ আয়শার মা বাবা আকুতি জানিয়ে বলেন, আমরা গরীব মানুষ মেয়ের চিকিৎসার এতো টাকা জোগাড় করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। কেউ আমার অসুস্থ কন্যা শিশু আয়শার জীবন বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য আমাদের পাশে দাঁড়ান তাহলে আমরা তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। যদি কেউ পাশে দাড়াতে চান তাহলে +৮৮০১৯৮৮২৭৬৫৩৬ (বিকাশ) এই নাম্বারে অথবা সরাসরি যোগাযোগ করে পাশে থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর