পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্র ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (বিএইচপি), হিন্দু জাগরণ মঞ্চ এবং শিলিগুড়ি মহানগর সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই সহিংসতা চালায়। ভাঙচুরের কারণে শিলিগুড়ির ভিসা কেন্দ্র অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বিক্ষোভকারীরা কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে এটিকে পুনরায় খোলার চেষ্টা না করার হুমকিও দেন।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর দমনমূলক ঘটনার প্রতিবাদে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাঘাযতীন পার্কে জমায়েত হন প্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মী। তারা শহরের বিভিন্ন অংশে মিছিল করেন এবং বাংলাদেশের ভিসা অফিস ঘেরাও করেন। বিক্ষোভের সময় তারা হিন্দুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ, দীপু দাস হত্যার বিচার এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানায়।
পরে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে পাঁচজনের একটি প্রতিনিধি দল ভিসা অফিসে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এবং অফিস বন্ধ রাখার দাবি জানায়। একজন প্রতিনিধি কর্মকর্তা ও কর্মীদের বলেন, “আপনাকে অনুরোধ, এই অফিসের তালা খোলা হবে না। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার চলবে না। ভিসা অফিসের ব্যানার এবং বোর্ড আজকের মধ্যে সরিয়ে ফেলুন।”
অপরদিকে নিরাপত্তার কারণে ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন থেকেও সব ধরনের কনসুলার সেবা ও ভিসা কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। একইভাবে, দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনও সব ধরনের কনসুলার সেবা ও ভিসা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই দুটি মিশনে সেবা বন্ধ থাকবে।
গত ২০ ও ২১ ডিসেম্বরও দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে উগ্রপন্থি এক সংগঠনের ২০-২৫ জন সমর্থক বিক্ষোভ করেন এবং বাংলাদেশিদের ভারত ছাড়ার আহ্বান জানান।
শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদারের জন্য কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক নোটিশ পাঠিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের বিভিন্ন স্থানে এমন সহিংসতার কারণে বাংলাদেশের কূটনীতিক ও হাইকমিশনের কর্মীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর