পোল্যান্ডের আকাশসীমার সন্নিকটে একটি রুশ গোয়েন্দা বিমান শনাক্ত করার পর দেশটির বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান তা আটক ও নিরাপদে এলাকা ত্যাগে বাধ্য করেছে। তবে ঘটনাটি পোল্যান্ডের নিরাপত্তার জন্য তাৎক্ষণিক কোনো হুমকি সৃষ্টি করেনি বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) পোল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানায়, বাল্টিক সাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় পোল্যান্ডের যুদ্ধবিমান রুশ একটি রিকনিস্যান্স (গোয়েন্দা) বিমানকে শনাক্ত করে, চাক্ষুষভাবে শনাক্ত করে এবং নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকা থেকে এসকর্ট করে বের করে দেয়।
এই ঘটনা ঘটে বেলারুশ সীমান্তের দিক থেকে আসা কিছু অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু শনাক্ত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর। ওই ঘটনায় পোল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সাময়িকভাবে বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
অপারেশনাল কমান্ড জানায়, বিশ্লেষণের পর নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ওই বস্তুগুলো ছিল সম্ভবত চোরাচালান কাজে ব্যবহৃত বেলুন, যা বাতাসের গতিপথ ও গতিবেগ অনুযায়ী ভেসে আসছিল। রাডার ব্যবস্থার মাধ্যমে এগুলোর গতিবিধি সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়। তবে বেলুনগুলোর সংখ্যা বা আকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়নি।
পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিস্লাভ কোসিনিয়াক-কামিশ বলেন, এসব ঘটনা দেশের নিরাপত্তার জন্য তাৎক্ষণিক কোনো ঝুঁকি তৈরি করেনি। তিনি বড়দিনের ছুটির মধ্যেও দায়িত্ব পালনের জন্য প্রায় ২০ হাজার সেনাসদস্যকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন,“বাল্টিক সাগর ও বেলারুশ সীমান্ত এলাকায় সংঘটিত সব ধরনের উসকানিমূলক তৎপরতা পোলিশ সেনাবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ছিল।”
এ বিষয়ে ওয়ারশতে অবস্থিত রাশিয়া ও বেলারুশের দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
উল্লেখ্য, এর আগে বেলারুশ থেকে পাঠানো চোরাচালানি বেলুনের কারণে প্রতিবেশী লিথুয়ানিয়ায় একাধিকবার বিমানবন্দর বন্ধ রাখতে হয়েছে। লিথুয়ানিয়া দাবি করে, এসব বেলুন সিগারেট চোরাচালানের কাজে ব্যবহৃত হয় এবং এটি বেলারুশের একটি “হাইব্রিড আক্রমণ”। যদিও বেলুনগুলোর সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে বেলারুশ।
এর আগে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পোল্যান্ড ও ন্যাটো বাহিনী দেশটির আকাশসীমায় প্রবেশ করা এক ডজনের বেশি রুশ ড্রোন ভূপাতিত করে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর এটিই ছিল পোল্যান্ডের আকাশসীমায় সবচেয়ে বড় অনুপ্রবেশ।
ওই ঘটনার পর পোল্যান্ড জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকে জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন নিয়ে আলোচনা তোলে। সে সময় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোসওয়াফ সিকোরস্কি বলেন, রাশিয়া ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া ক্ষমতা পরীক্ষা করছে।
সূত্র- আলজাজিরা।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর