• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১২ সেকেন্ড পূর্বে
মোঃ আসাদুজ্জামান
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৩:৫৫ দুপুর

শুষ্ক মৌসুমেও থামছে না বরগুনার নদী ভাঙন, আতঙ্কে হাজারো পরিবার

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বর্ষা মৌসুমের শেষে শুষ্ক মৌসুমেও থামছে না উপকূলীয় জেলা বরগুনার তিনটি নদীতীরের ভাঙন। অসময়ের এই ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে নদীতীরের কয়েক হাজার বাসিন্দার। জেলার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর ভাঙনে প্রায় দুই কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। ভাঙনের করাল থাবায় এরই মধ্যে ফসলি জমি, বসতঘর ও ভিটেমাটিহারা হয়েছে শত শত পরিবার।

জেলার বামনা উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামে বিষখালী নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে একটি আবাসন প্রকল্প ও উপজেলার একমাত্র খাদ্যগুদামটি। দক্ষিণ রামনা এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের এক-তৃতীয়াংশ ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। যেকোনো সময় বাঁধটি পুরোপুরি নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা স্থানীয়দের।

জানা গেছে, বরগুনা জেলার ভেতর দিয়ে প্রমত্তা পায়রা ও বিষখালী নদী বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। এ ছাড়া পাথরঘাটা উপজেলার পূর্বে বিষখালী ও পশ্চিম পাশ দিয়ে সাগরে মিলেছে বলেশ্বর। ফলে নদীবেষ্টিত বরগুনা জেলায় সারা বছরই ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটায় বাসিন্দারা। জেলার তিনটি নদীর ভাঙনের হুমকিতে থাকা স্থানগুলো হলো বরগুনা সদর উপজেলার ছোট বালিয়াতলী, লতাকাটা, ডালভাঙা ও পালের বালিয়াতলী; বামনা উপজেলার দক্ষিণ রামনা, চলাভাঙ্গা, কলাগাছিয়া ও চেঁচান; বেতাগী উপজেলার কালিকাবাড়ি ও মোকামিয়া; পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া, কালমেঘা, পরিঘাটা ও গোড়াপদ্মা এবং তালতলী উপজেলার নলবুনিয়া, জয়ালভাঙা ও নিশানবাড়িয়া।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব এলাকায় কাগজে-কলমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ থাকলেও বাস্তবে কোনো বাঁধই অবশিষ্ট নেই। অনেক স্থানে জলোচ্ছ্বাস ঠেকাতে দায়সারাভাবে কোনোমতে রিং বাঁধ নির্মাণ করা হয়; যা জোয়ারের তোড়ে উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে।

বরগুনা সদরের পায়রাতীরের বালিয়াতলী গ্রামের বাসিন্দা ছগির হোসেন বলেন, ‘পায়রা প্রতিবছর আমাদের ভিটেমাটি, ফসলি জমি গিলে খাচ্ছে। আমাদের এই স্থানে বাঁধ নেই দেড় যুগ ধরে। প্রতিবছরই নতুন করে বসতঘর স্থানান্তর করতে হয়। এবার ভাঙলে আমাদের মাথা গোঁজার কোনো ঠাঁই থাকবে না। তখন পথে নামতে হবে। পায়রা আমাদের শেষ করে দিয়েছে।’

একই গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পায়রা নদীর অসময় ভাঙনে আমাদের বাড়িঘর হারাতে বসেছি। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু কেড়ে নিচ্ছে নদী। আমাদের এখানে প্রায় ৬০টি পরিবারকে ভাঙনের ঝুঁকিতে রেখে ৫০০ ফুট দূরত্বে একটি রিং বাঁধ নির্মাণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বন্যার সময় দিনরাত পানিতে ভাসতে হয়। আমাদের এই স্থানে যদি জিও বালুর বস্তা ফেলা হয়, তাহলে আমরা ভাঙন থেকে রক্ষা পাব।’

বামনার রামনা এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের জিও ব্যাগ ধসে বিষখালী নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এই স্থান দিয়ে বাঁধটি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে বিলীন হতে পারে। ভাঙন এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক নাসির মিয়া বলেন, ‘গত বছর এখানে বালুভর্তি বস্তা ফেলা হয়েছিল, কিন্তু তা ছয় মাসও টেকেনি। বিষখালীর উত্তাল ঢেউয়ের কবলে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে বাঁধের যে অংশটুকু টিকে আছে, তা যেকোনো সময় বিলীন হতে পারে।’

বরগুনা পাউবো কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ২২টি পোল্ডারে ৮০৫ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে দুই কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে ৪১/১ এ, বি ও ৪১/৭ পোল্ডারের বাঁধ পুনর্বাসন, বেতাগী শহর, বিষখালী ও পায়রা নদীভাঙন প্রতিরক্ষা প্রকল্পের আওতায় আরএডিপি প্রকল্পের অর্থায়নে ৮২৬ কোটি টাকা বরাদ্দে ৪৬ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া একই প্রকল্পের আওতায় আরএডিপি প্রকল্পের অর্থায়নের ৭১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ দশমিক ১৬০ কিলোমিটার টেকসই (ব্লক দিয়ে নির্মাণ) বাঁধ নির্মাণকাজ চলছে। আগামী দেড় বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ করা হবে বলে আশাবাদী পাউবো।

বরগুনা জেলা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, ‘ঝড় বা অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারে উপকূলের নদ-নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ার হলে পানির উচ্চতা ১৫ থেকে ১৮ ফুট বৃদ্ধি পায়। জেলার বিভিন্ন নদীতীরে ষাটের দশকের দিকে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে বাঁধের উচ্চতা কম থাকায় উচ্চ জোয়ারে বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। উপকূলের বাসিন্দাদের ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য বাঁধ মেরামতের পাশাপাশি উচ্চতাও বাড়ানো দরকার।’

বরগুনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল হান্নান প্রধান বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিয়েছি, বরগুনায় ব্যাপক নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা অনেক স্থানে এরই মধ্যে স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক কাজ করেছি। ভাঙনকবলিত স্থানগুলো সাময়িকভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করব। তবে ওই জায়গাগুলোতে স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক কাজ করার জন্য সম্ভাব্যতা পর্যালোচনা করা হয়েছে। একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। অর্থ বরাদ্দ পেলে নতুন ওই জায়গাগুলোতেও স্থায়ী প্রতিরক্ষার কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।’

মাসুম/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com